Logo
Logo
×

অর্থনীতি

চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৮ পিএম

চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ

ছবি - সংগৃহীত

দেশি-বিদেশি চ্যালেঞ্জের মধ্যে একক দেশ হিসেবে গত বছরও বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। যদিও বাজার হিস্যা দশমিক ৪৮ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে গেছে। বাংলাদেশের পর তৃতীয় অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। আর শীর্ষ অবস্থানে আছে বরাবরের মতো চীন। যদিও তাদের বাজার হিস্যা ২ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে গেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিকস : কি ইনসাইটস অ্যান্ড ট্রেন্ডস ইন ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। চলতি মাসে এটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বৈশ্বিক পণ্য ও সেবা বাণিজ্য ৪ শতাংশ বেড়ে ৩১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা কিনা তার আগের বছর (২০২৩ সাল) ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। গত বছর বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্য ২ শতাংশ এবং সেবা খাতের ব্যবসা বেড়েছে ৯ শতাংশ। এ ছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্যে সেবা খাতের হিস্যা বেড়ে হয়েছে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০০৫ সালের পর সর্বোচ্চ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর (২০২৪ সাল) বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ৫৫৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ। ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশ তৈরি পোশাক আমদানি করেছিল ৫২০ কোটি ডলারের।

ডব্লিউটিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানা দুই বছর ধরে (২০২৩ ও ২০২৪ সাল) বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৩৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে আছে। গত বছর রপ্তানি হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক ২১ শতাংশ। রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি থাকলেও বাজার হিস্যা কমে গেছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালে বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের বাজার হিস্যা ছিল ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত বছর সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ।

জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমতে পারে। অন্যদিকে এই বাজারে ভিয়েতনামের রপ্তানি বাড়তে পারে। এতে করে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের রপ্তানি কাছাকাছি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারপরও এই বছর দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে গত বছর দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। এতে করে আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। পরবর্তী সময়ে শ্রমিক আন্দোলনে আশুলিয়ার মতো বড় শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু কারখানায় কয়েক সপ্তাহ উৎপাদন বন্ধ থাকে। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটেও ভুগেছে এই শিল্প খাত।

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির হিসাব নিয়ে গরমিল আছে। গত বছরের জুলাইয়ে সেটি প্রথম সামনে আসে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, পণ্য রপ্তানি বেশি দেখাচ্ছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। পরে সেটি সংশোধন করে ইপিবি। তবে ২০২২ সালে ডব্লিউটিওর হিসাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলার দেখানো হয়েছিল। যদিও প্রকৃত রপ্তানি আরও কম হয়েছিল। তখন সব মিলিয়ে তিন অর্থবছরের ৩৪ মাসে এনবিআরের চেয়ে ২ হাজার ২৬১ কোটি ডলারের রপ্তানি বেশি দেখিয়েছিল ইপিবি। ফলে ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ডব্লিউটিওর হিসাবে প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এদিকে করোনার আগে থেকে চীনের রপ্তানি কমলেও বিশ্ববাজারে এখনো দেশটি শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক। গত বছর (২০২৪ সাল) চীন ১৬৫ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি মাত্র দশমিক ৩০ শতাংশ। ২০১৭ সালে বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চীনের বাজার হিস্যা ছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ। গত বছর সেটি কমে হয়েছে ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

একক দেশ হিসেবে বিশ্বে তৃতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ ভিয়েতনাম। ২০২০ সালে দেশটি বাংলাদেশকে টপকে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছিল। অবশ্য এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ আবার দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান পুনরুদ্ধার করে। গত বছর ভিয়েতনাম ৩৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া তাদের বাজার হিস্যাও কিছুটা বেড়ে ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে।


অন্য দেশের কী অবস্থান


ডব্লিউটিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক দেশ হিসেবে বিশ্বের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে তুরস্ক ও ভারত। গত বছর তুরস্ক ১৮ বিলিয়ন ও ভারত ১৬ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর তুরস্কের রপ্তানি ৪ শতাংশ কমলেও ভারতের বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। আর বাজার হিস্যা তুরস্কের ৩ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ভারতের ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

বৈশ্বিক তৈরি পোশাক রপ্তানিতে একক দেশ হিসেবে ষষ্ঠ থেকে দশম অবস্থানে রয়েছে কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর কম্বোডিয়া ১০ বিলিয়ন, পাকিস্তান ৯ বিলিয়ন, ইন্দোনেশিয়া ৯ বিলিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র ৭ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।


Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন