Logo
Logo
×

অর্থনীতি

অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে বড় পতনের মুখে ডলার

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৩ এএম

অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে বড় পতনের মুখে ডলার

অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে ডলারের দাম সবচেয়ে কমেছে। ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে পড়েছে ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এর আগে ১৯৭৩ সালে ডলারের সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছিল। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণমান থেকে বেরিয়ে আসে। যুক্তরাষ্ট্র যতদিন ডলারের মূল্য নির্ধারণে স্বর্ণমান ব্যবহার করেছে, ততদিন দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ছিল না। আর এই সময়েই মানব ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৮০ বছর ধরে স্বর্ণমান ব্যবহার করেছে। কিন্তু ১৯৭০-এর দশকে এই ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ছিল যুগান্তকারী ঘটনা। এরপর বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় ডলারের ব্যবহার ও মান বেড়ে যায়।

কিন্তু এখন যা ঘটছে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন ডলারের এই পতনের পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্কনীতি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে বিশ্বব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের প্রচেষ্টাকে বিশেষভাবে দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি, মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা এবং ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের মিশ্রণ ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার ওপর ধীরে ধীরে আস্থা হ্রাসের কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর অর্থ হলো আমেরিকানদের বিদেশ ভ্রমণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে এবং বিদেশিদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের আকর্ষণ কমে যাচ্ছে। দেশটি যখন আরও বেশি ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে তখনি এমন ঘটনা ঘটছে।

যদিও ট্রাম্প তার চরম শুল্ক আরোপের নীতি থেকে সরে এসেছেন এবং বছরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার এবং বন্ডেরবাজারও ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছে, কিন্তু ডলারের মূল্য ক্রমাগত কমছে।

এই পরিস্থিতিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের জি১০ বৈদেশিক মুদ্রা গবেষণার বৈশ্বিক প্রধান স্টিভ ইংল্যান্ডার বলেন, ডলার দুর্বল না শক্তিশালী, এটা মূল প্রশ্ন নয়। মূল প্রশ্ন হলো, বিশ্ব আপনার নীতিগুলোকে কিভাবে দেখছে এবং এ সম্পর্কে কি বলছে?

ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পরপর ডলার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। অনেক বিনিয়োগকারীই আশা করেছিলেন যে, ট্রাম্প ব্যবসাবান্ধব ও প্রবৃদ্ধিমুখী হবেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করা হলে বিপুল সুবিধা দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। ফলে ধারণা করা হয়েছিল, ট্রাম্প বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারবেন এবং এতে করে ডলারের চাহিদা বাড়বে।

কিন্তু এমন প্রত্যাশা স্থায়ী হয়নি। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের সময় ডলার সূচক সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছানোর পরই পড়তে শুরু করে। নতুন প্রশাসন ব্যবসাবান্ধব হবে সেই আশা দূর হয়ে শুরু হয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতির আতঙ্ক, উচ্চ সুদহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব আর অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন ধীরে ধীরে ডলার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্পদের বিকল্প খুঁজছেন। যদিও অনেকদিন ধরেই বৈশ্বিক বিনিয়োগের নিরাপদ গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র।


Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন