Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রেমিক মাসুদের সঙ্গে দেখা করতে এসে বিজিবির হাতে আটক ভারতীয় কিশোরী

Icon

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম

প্রেমিক মাসুদের সঙ্গে দেখা করতে এসে বিজিবির হাতে আটক ভারতীয় কিশোরী

ভারতীয় সেই কিশোরী নূপুর। ছবি: সংগৃহীত

প্রেমের টানে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন ভারতের এক তরুণী। ভালোবাসার আশায় সীমান্ত পাড়ি দিলেও শেষমেশ ভালোবাসার মানুষটি তাঁকে ফেলে পালিয়ে যান। আর তরুণীর ঠাঁই হয় এক সেফ হোমে। তবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ বলছে, আটক ভারতীয় ওই নারীর বয়স ১৬ বছর। ঘটনাটি গত বুধবার দুপুরের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আটক ওই ভারতীয় নাগরিকের নাম নূপুর। তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায়। বামনগোলা থানার কাশিমপুর নামক একটি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বর্তমানে সে বাংলাদেশের একটি সেফ হোমে আছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাকে রাজশাহী সেফ হোমে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, নওগাঁ জেলা কারাগারের জেলার উম্মে সালমা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া বিওপি সীমান্তের ২৪৫ /সি এস নম্বর পিলার এলাকা দিয়ে নূপুর নামে ওই কিশোরী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিজিবি সদস্যরা তাকে আটক করে সাপাহার থানায় হস্তান্তর করেন। পরে সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে থানায় একটি মামলা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নূপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সাপাহারের ঘাসডাঙ্গা গ্রামের মাসুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হয়। ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে চলতে থাকে কথাবার্তা, তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। মাসুদ ভারতে কাজ করতে গেলে তাদের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে।

প্রেমিকের সঙ্গে থাকার ইচ্ছায় ওই নূপুর সীমান্তের পথে পা বাড়ায়। কিন্তু বাংলাদেশের সীমানায় পা রেখেই চরম বাস্তবতার মুখোমুখি হয় সে। বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে মাসুদ পালিয়ে যান, আর বিজিবির হাতে ধরা পড়ে সে। বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, বিজিবি প্রথমে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতে ফেরত পাঠাতে চাইলেও বিএসএফ তাকে তাঁদের দেশের নাগরিক হিসেবে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর বিজিবি তাকে থানায় হস্তান্তর করে এবং একটি মামলা হয়।

থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় ঘটনা জানতে চাইলে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের ওই কিশোরী জানায়, সে পশ্চিমবঙ্গের পাকুয়া কলেজে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাসুদের প্রেমে পড়েই বাংলাদেশে এসেছেন। কিন্তু সীমান্তে এসে একা পড়ে যান। তার ভাষায়, ‘মাসুদ আমাকে ফেলে পালিয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, ‘বিজিবির মাধ্যমে মেয়েটিকে থানায় আনার পর সীমান্ত আইনে মামলা নেওয়া হয়। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।’

নওগাঁ জেলা আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর একেএম নুরুল ইসলাম জানান, ‘শিশু আদালতের নির্দেশে প্রথমে কিশোরীটিকে নওগাঁ সেফ কাস্টডিতে পাঠানো হয়। বর্তমানে কোথায় আছেন সঠিক জানা নেই।’ 

বর্তমানে কিশোরীটির অবস্থানের বিষয়ে নওগাঁ জেলা কারাগারের জেলার উম্মে সালমা বলেন, ‘শুক্রবার আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহীর সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে মাসুদের বিষয়ে জানতে চেয়ে সাপাহার সীমান্তের বামনপাড়া বিওপিতে যোগাযোগ করা হলে বিজিবি সদস্যরা জানায়, ঘটনার দিন মাসুদ নামের ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি। তিনি নিখোঁজ। যেহেতু সীমান্ত এলাকায় আমরা শুধু এই কিশোরীকে পেয়েছি, এ জন্য অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়েছে।

অপরদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, গত বুধবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যায়ও ফেরেনি নূপুর নারী। চিন্তিত পরিবারের সদস্যরা আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজখবর নেন। অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের এক ব্যক্তি পরিবারকে জানান, নওগাঁর সাপাহার থানার একটি অংশে তাকে বিজিবি আটক করেছে। এই ক্যাম্পটি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার বিপরীতে অবস্থিত।

পরে জানা যায়, ওই কিশোরী বিএসএফকে ফাঁকি দিয়ে কোনোভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও বিজিবির হাতে ধরা পড়েন। নূপুরের মা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক যুবকের সঙ্গে তার মেয়ের ‘প্রেমের সম্পর্ক’ ছিল। তবে ওই যুবক বাংলাদেশের বাসিন্দা, সে বিষয়ে তারা বা পরিবার জানত না। নারীর বাবা-মা বামনগোলা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন।

বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে এখনো কোনো পতাকা বৈঠক হয়নি। নূপুরের মা বলেছেন, পুলিশ ও বিএসএফ আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনুক।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন