বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ফেসবুক লাইভে এসে নিজের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণার কথা জানিয়ে রাসেল আহম্মেদ (২৫) নামের এক তরুণ ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে ধুনট পৌরসভার দক্ষিণ অফিসারপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবনের মাধ্যমে তিনি আত্মহত্যা করেন।

রাসেল ধুনট শহরের স্কুল মার্কেটের একজন পরিচিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তার স্থায়ী ঠিকানা পৌর এলাকার পশ্চিম ভরণশাহী গ্রামে। পিতার নাম আবু তাহের ওরফে সোনা উদ্দিন। তিনি একা বাস করতেন দক্ষিণ অফিসারপাড়ার একটি ভাড়া বাসায়।

স্থানীয়দের তথ্যমতে, রাসেল সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় একটি ব্যবসায়িক সফর শেষে ১৫ মে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর থেকেই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কিছু সমস্যা নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে বাসায় ফিরে তিনি দরজা বন্ধ করে নিজের ফেসবুক পেইজে লাইভে আসেন।

লাইভে প্রায় ৫৫ মিনিট ধরে রাসেল তার মনের দুঃখ ও যন্ত্রণার কথা প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, তিনি পরিবারকে 'মুক্তি' দিতে চান। এরপর লাইভ চলাকালীন অবস্থায় তিনি পরপর দুটি গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন এবং কিছু সময়ের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়েন।

লাইভ দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া স্বজনরা দ্রুত বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে রাসেলকে উদ্ধার করেন। প্রথমে তাকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ধুনট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমিত হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি পারিবারিক কলহজনিত আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বগুড়া সদর থানার এসআই ফিরোজ মিয়া জানান, এ ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাসেলের আত্মহত্যার লাইভ ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।