ক্লাসে শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিতির বিকল্প নেই : নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ০১:৪৪ এএম
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম
দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ক্রমাগত অবনতি ঠেকাতে একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২৪ মে) নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ কলেজে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ কর্মশালায় এই অভিমত ব্যক্ত করা হয়। কর্মশালার শিরোনাম ছিল— "মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়ন: শিক্ষা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয়"।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফজলুল হক রুমন রেজা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও মুখ্য আলোচকের ভূমিকায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মনিনুর রশিদ।
জেলার পাঁচটি উপজেলার পূর্ববর্তী কর্মশালাগুলোর সুপারিশ পর্যালোচনা করে একটি বাস্তবসম্মত, যুগোপযোগী এবং প্রয়োগযোগ্য একশন প্ল্যান তৈরিই ছিল এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য। এতে জেলার শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষার ফলাফলের দিকেই মনোযোগ নয়, বরং তাদের মানবিক, নৈতিক এবং বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা জাতির মূল সম্পদ, এটি বিনিয়োগ নয়, ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি।”
তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে শতভাগ উপস্থিতির ওপর জোর দিয়ে বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা মার্কেটে বা রাস্তায় নয়, স্কুলে থাকবে— এটাই স্বাভাবিক। এর বিকল্প নেই।” শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা সমাজে রোল মডেল হোন। কারণ আপনারা যদি দায়িত্বে ঘাটতি করেন, তাহলে দেশ পথ হারাবে।”
অধ্যাপক ড. মনিনুর রশিদ বলেন, “শিক্ষা খাতের সংকট কেবল প্রশাসনিক নয়, এটি সামাজিক এবং পারিবারিক ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়।” তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো তুলে ধরে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ এবং সহিংস আচরণ থেকে বোঝা যায়, শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে গভীর সমস্যার শেকড় রয়েছে।”
তিনি শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি, শিক্ষকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং মেধাবীদের এই পেশায় আকৃষ্ট করতে নীতিগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালার সমাপ্তি বক্তব্যে অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা শিক্ষার উন্নয়নে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় যুক্ত থেকে বাস্তবায়নে অংশ নেবেন।
এই কর্মশালাটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।



