Logo
Logo
×

সারাদেশ

কক্সবাজারে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে সিলেটের ৬ জন নিখোঁজ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম

কক্সবাজারে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে সিলেটের ৬ জন নিখোঁজ

ছবি : সংগৃহীত

কক্সবাজারে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ৬জন রাজমিস্ত্রী শ্রমিক ৬দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে।

নিখোঁজ ৬ জন হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদি'র ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)। 

নিখোঁজ সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে সিলেটে  জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হন। 

পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ৬জনের মধ্যে দুজনের অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফ দেখাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছেন।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ ৬জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই ও নিখোঁজ খালেদ হাসানের চাচা আব্দুল বাছিত দুলালের সঙ্গে। তিনি জানান, এমাদ উদ্দিন ও খালেদ আহমদসহ তাদের সঙ্গীয় সবাই ১৫ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হয়ে ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছান। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে এমাদ উদ্দিন ফোনে কল দিয়ে বাড়িতে জানিয়েছে তারা সবাই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। এরপর আর বাড়িতে যোগাযোগ করেনি। তখন বাড়ি থেকে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর এমাদ ও খালেদের সঙ্গে থাকা অন্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তখন তাদের মোবাইল নাম্বারও বন্ধ মিলে। প্রথমে বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। কিন্তু পাঁচদিনেও কারো মোবাইলে কল না যাওয়ার কারণে বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে পরিবারগুলোতে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় জিডি করতে চাইলে পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে কক্সবাজারে জিডি করার জন্য। সেখানের থানায় জকিগঞ্জ থানা থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের লোকজন কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছেন।

নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রামে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। চট্টগ্রামের ঠিকাদারের মাধ্যমে কক্সবাজার এইবার প্রথম গিয়েছে। কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তবে ওই ঠিকাদারের নাম ঠিকানা নিখোঁজ রশিদের ভাইয়ের জানা নেই। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা তাদেরকে ওইখানে যে লোক নিয়েছে ওই লোক তাদেরকে কিছু করেছে। কেউ জিম্মি করলে কারো না কারো পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে টাকা-পয়সা দাবি করতো।

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, তারা কাজের জন্য চট্টগ্রাম গিয়ে ৫/৬ মাস সেখানে থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। তাছাড়া সারা বছরই চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। মঙ্গলবার আমার ছেলে বাড়ি থেকে যাওয়ার পরে আর কোনো যোগাযোগ নেই। ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় পরিবার আত্মীয় স্বজনরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। খালেদের মা ছেলের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কোনোভাবেই সান্ত্বনা দেয়া যাচ্ছে না। রোববার সারারাত থানায় ছিলাম। যে ঠিকাদার নিয়েছিল তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ। থানার ওসি খবর নিয়ে আমাদেরকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের ওই ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সাথের অপর একজনের নাম বাবুল। 

সফর উদ্দিন আরও বলেন, যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছে সেখানে অভিযোগ দেয়ার জন্য পুলিশ আমাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে। আমাদের এলাকার অনেক লোক সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। তারাও তাদের মতো করে খোঁজাখুজি করছেন। কিন্তু কোথাও নিখোঁজ ৬ জনের মধ্যে কারো সন্ধান মেলেনি। আমার সেই এলাকায় গিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হবো।

এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, জকিগঞ্জ থেকে কাজের উদ্দেশ্য কক্সবাজার গিয়ে ৬জন রাজমিস্ত্রী শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি। নিখোঁজদের পরিবার থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা তাদেরকে সহায়তা করে যাচ্ছি। নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের সর্বশেষ অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফে দেখাচ্ছে। কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করার জন্য নিখোঁজ হওয়া লোকজনের অভিভাবকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরাও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কেউ কোন ধরনের অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি।  

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন