বগুড়ায় করতোয়া নদীর ১০ দশমিক ৭৫ একর জমি দখলমুক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
বগুড়ায় করতোয়া নদীর জমি দখলমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে নদীর প্রায় ১০ দশমিক ৭৫ একর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ঠেঙ্গামারা এলাকায় পরিচালিত এ উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিয়ান মুন্সেফ ও আবু শাহমার সমন্বয়ে গঠিত একটি দল। অভিযানে সহায়তা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং নেসকোসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা।
এই অভিযানে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) এর দখলে থাকা করতোয়া নদীর জমিতে নির্মিত ১১টি স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। এর মধ্যে ছিল টিএমএসএস-এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিসিএল গ্লাস ফ্যাক্টরির একাধিক ভবন।
জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, করতোয়া নদীর জমির ওপর গড়ে তোলা বিসিএল গ্লাস ফ্যাক্টরির কিছু অবৈধ অবকাঠামো উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাস, অক্সিজেন প্লান্ট ও শহীদ মিনারও নদীর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে, যা পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে।
ডিসি হোসনা আফরোজা জানান, ১৯৯৪ সাল থেকে টিএমএসএস করতোয়া নদীর বিভিন্ন অংশে বর্জ্য ফেলে জমি দখল করতে শুরু করে। একাধিকবার ভূমি জরিপ করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে জমি উদ্ধার সম্ভব হয়নি। তবে সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে করা এক জরিপে দেখা যায়, টিএমএসএস প্রায় ১৬.৯৭ একর নদীর জমি দখল করে রেখেছে, যা নদী কমিশনের প্রতিবেদনেও নিশ্চিত করা হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে টিএমএসএসকে জমি খালি করার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি দখল ছাড়ার পরিবর্তে আদালতে মামলা করে এবং একতরফা নিষেধাজ্ঞা আদায় করে নেয়। পরবর্তীতে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং মামলার খারিজের পরেই এই অভিযান পরিচালিত হয়।
জেলা প্রশাসক স্পষ্টভাবে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নদীর জমি কাউকে ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং এ ধরনের দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।



