
প্রিন্ট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৩ এএম
জুলাই বিপ্লবে দুই চোখের আলো হারানো সেই মাহবুবের পাশে মানবিক ডিসি জাহিদুল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুই চোখের আলো হারানো সেই মাহবুব আলমের পাশে মানবিক ডিসি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের ছররা গুলিতে দুই চোখের আলো হারানো নারায়ণগঞ্জের মাহবুব আলমের পাশে দাঁড়ালেন সারাদেশে মানবিক ডিসি হিসেবে পরিচিত জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া।
রবিবার (১৬ মার্চ) জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে ডেকে এনে আহত এই জুলাই বীরকে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন। এ সময় তিনি বলেন, আপনাদের মতো হাজারো জুলাই বীরের আত্মত্যাগের কারণেই আজকের নতুন বাংলাদেশ এবং আমি এই দায়িত্বে আসতে পেরেছি।
জুলাই বিপ্লবের সবার আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আগামী প্রজন্মও গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে শহীদ আবু সাঈদ,শহীদ মুগ্ধদের মতো যারা জীবন দিয়েছেন এবং আপনাদের মতো যারা সারাজীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংগ হারাতে বসেছেন তাদেরকে।
জেলা প্রশাসক এই সময় আবেগী কন্ঠে বলেন,আপনাদের ঋণ শুধু রাষ্ট্র কেন,কারো পক্ষেই শোধ করা সম্ভব না। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চটাই করা হবে এই জেলার অধিবাসী জুলাই বিপ্লবের সকল শহীদ এবং আহতদের জন্য।
আর্থিক সহয়তার চেক পাওয়ার পরে এক প্রতিক্রিয়ায় আহত জুলাই বীর মাহাবুব আক্ষেপ করেই বলেন,জুলাই আন্দোলনে আমার সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। আমার প্রিয়তমা স্ত্রীও আমি অন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাকে ফেলে চলে গেলো গত ডিসেম্বর মাসে। আমি এখন পরিবারের অনেকটা বোঝা হয়ে বেচে আছি দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে।
কিন্তু জেলা প্রশাসক আজ যেভাবে আমাকে এবং আমার পরিবারকে সম্মান জানালেন,সেটা দেখে এতো কিছু হারিয়েও নিজকে গর্বিত মনে হচ্ছে।
এই সময় উপস্থিত মাহাবুবের মাতা হালিমা বেগমও জেলা প্রশাসকের মানবিক কার্যক্রমের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
গত বছরের ১৮ জুলাই বেলা ১১টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার ও গোল চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে ধাওয়া দেয় ও গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ফারাহানা মানিক মুনা বলেন, এ সময় পুলিশ আরও মারমুখী হয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। তিনি বলেন, ওই দিন পুলিশের গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন মাহবুব।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে ভারত-থাইল্যান্ডসহ ১৮ টি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েছেন জুলাই বীর মাহবুব।