ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১২:২৪ এএম
নরসিংদীতে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু। ছবি : সংগৃহীত
নরসিংদীতে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শিবপুরের ইটাখোলা মুনসেফেরচর এলাকার মালোয়েশিয়া প্রবাসী জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী সাবিনা আক্তার (২৫) ও আড়াই বছরের মেয়ে মাইনা মুনা। আহত হয়েছে তাদের চার বছর বয়সী ছেলে সিনা। তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী রেলওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল্লাহ যুগের চিন্তা ২৪ কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার সময় নিহত সাবিনার সঙ্গে থাকা তার ভাগনে তানিম জানান, সম্প্রতি তার মামা বিদেশ থেকে দেশে আসেন। একই সঙ্গে তার এক চাচা বিদেশ যাবেন। তাই তারা চারজন নরসিংদীর ইন্ডেক্সপ্লাজায় কেনাকাটা করেতে আসেন। কেনাকাটা শেষে স্টেশন এলাকায় আসেন। ওই সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি নরসিংদী রেলস্টেশন অতিক্রম করছিল। ট্রেনটি হুইসেল দিলে পাঁচ বছর বয়সী শিশু সিনহা প্ল্যাট ফরম থেকে ট্রেনের সামনে পড়ে যায়। ওই সময় ছেলেকে বাঁচাতে কোলে থাকা আরেক সন্তানকে নিয়ে এগিয়ে যান তার মা সাবিনা। ওই সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে নিহত সাবিনার অপর শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠান। সদর হাসপাতালের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকায় পাঠান। এ ঘটনার পর মা ও শিশুর মরদেহ দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা স্টেশনে ছুটে আসেন। ওই সময় স্বজনদের কান্নায় স্টেশন এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জসিম মিয়া জানান, ট্রেন আসার সময় হুইসেল দেওয়ার সাথে সাথে ভয়ে বাচ্চাটি প্ল্যাট ফরম থেকে রেললাইনে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে যায় তার মা। ওই সময় তার কোলে থাকা শিশুসহ দুইজনই কাটা পড়ে মারা যায়। নিহত নারীর আরেক বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নরসিংদী স্টেশন মাষ্টার এটি এম মুছা জানিয়েছেন, চট্রগ্রামগামী সুবর্ন এক্সপ্রেস ট্রেনেটি নরসিংদী স্টেশন অতিক্রম করছিল। ওই সময় ট্রেনটির নিচে পরে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। একটা শিশু বাচ্চা গুরুত্বর আহত হয়। তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মাহামুদুল বাশার কমল জানান, আহত শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে বাঁচাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।