কোটা আন্দোলনের মিছিলে বাধা দেওয়ার ভিডিও করায় শিক্ষার্থীকে মারধর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তামিম হোসেন। ছবি : সংগৃহীত
কুমিল্লায় কোটা আন্দোলনকারীদের মিছিলে কোটার পক্ষের শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার ভিডিও করায় এক শিক্ষার্থীকে তুলে হলে নিয়ে মারধর করেছে মিছিলে বাধাদানকারী হলের ছাত্ররা। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের নজরুল হলে এ ঘটনা ঘটে।
পরে ওই শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ওই শিক্ষার্থী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তামিম হোসেন। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, শুক্রবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে ডাকা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে যোগ দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্ররা। কুমিল্লা সদরের ধর্মপুর এলাকায় কলেজের ক্যাম্পাসে তারা বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন। এসময় সংবাদ সংগ্রহে যান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্যসহ জেলার সাংবাদিকরা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য মো. তামিম হোসেন।
এসময় কোটা বিরোধীদের আন্দোলনে বাধা দিতে আসেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি শাখার নজরুল হলের শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগী তামিমকে ভিডিও করতে দেখে প্রথমে তার মোবাইল নিয়ে যান হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে তাকে মোবাইল দেবেন বলে হলের দিকে নিয়ে যান তারা। হলের একটি কক্ষে নিয়ে যান তারা। তারপর তার মাথা, হাত, পা ও চোখসহ দেহের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়। নির্যাতনের দুই ঘণ্টা পর খবরটি জানতে পারেন কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। এসময় তারা তামিমকে হল থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে সাধারণ ছাত্রদের তত্ত্বাবধানে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
আহত তামিম সাংবাদিকদের বলেন, আমার থেকে তারা মোবাইল নিয়ে যায়। পরে আমাকে নির্যাতন করে। তারা আমাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়। আমার এখন কিছুই মনে পড়ছে না। আমি শরীরও নাড়াতে পারছি না।
এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবু জাফরকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি কোনও জবাব দেননি।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কলেজের নজরুল হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে শিবিরকর্মী সন্দেহে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।