Logo
Logo
×

সারাদেশ

৬১৫ যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন রওনা দিল একটি জাহাজ

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পিএম

৬১৫ যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন রওনা দিল একটি জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ৬১৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি জাহাজ রওনা দিয়েছে। রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ‘এমভি বারো আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজ দীর্ঘ ৯ মাস পর পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে ১ ঘণ্টা পরে জাহাজ ছাড়া হয়। জাহাজটি বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে দ্বীপে পৌঁছাবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য তিনটি জাহাজ অনুমতি পেলেও যাত্রী সংকটের কারণে একটি মাত্র জাহাজ যেতে পেরেছে বলে জানা যায়। দ্বীপে যাওয়া পর্যটকদের যাতে সেখানে প্লাস্টিক ব্যবহার করতে না হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। 

ঢাকা বনশ্রী থেকে আসা পর্যটক হিল্লোল খন্দকার বলেন, ‘সর্বশেষ ২০১৭ সালে সেন্টমার্টিন গিয়েছিলাম। প্রায় ৭ বছর পর আজ আবার যাচ্ছি। সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য আমাদের টানে বলে ট্রাভেল পাসের মতো ঝামেলা পোহানোর পরও দ্বীপটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।’ 

রামপুরার বাসিন্দা শওকত মাহমুদ বলেন, ‘অ্যাপসে ঢুকে ট্রাভেল পাস কনফার্ম করেছি। পরে ডকুমেন্টগুলো দেখার পর তারা জাহাজ উঠার অনুমতি দিল। আগে তেমন কিছু করা লাগতো না। এখন একটু কড়াকড়ি অবস্থা।’ 

তবে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজে কোনো পর্যটককে পলিথিন ও ওয়ানটাইম প্লাস্টিক নিয়ে উঠতে দেওয়া হয়নি। 

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাটের ব্যাগ উপহার দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অ্যাপস থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করে পর্যটকরা রেজিস্টেশন করেছেন। সেন্টমার্টিনের পরিবেশের কথা চিন্তা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে যাচাই-বাছাই করে দ্বীপটিতে পর্যটক যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।’

ট্রাভেল পাস যেভাবে মিলবে-

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অ্যাপস থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইনস্টল করার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পরই প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে অনলাইনেই ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করা যাবে। এই ট্রাভেল পাস দেখিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া জাহাজে উঠতে হবে। 

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নাফ নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠায় নাব্যতার সংকট এবং মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির কারণে নিরাপত্তার অভাবে আপাতত টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। শুধু কক্সবাজার শহর থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। 

প্রতি বছর সরকারের পক্ষ থেকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ছয় মাস টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। বাকি ছয় মাস সাগর উত্তাল থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। 

গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে সেন্টমার্টিনের পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন এবং একই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপগামী জাহাজ চলাচল নিয়ে কিছু দিক-নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। 

কমিটির কর্মপরিধি হিসেবে বলা হয়েছে, ‘সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে ওঠার আগে পর্যটকদের জাহাজ ছাড়ার জায়গা, অর্থাৎ এন্ট্রি পয়েন্টে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ট্রাভেল পাস নিতে হবে। ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করবে কমিটি। পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটি কঠোর থাকবে।’

‘পর্যটকেরা সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছার পর কোনো হোটেলে থাকবেন তা লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি রেজিস্টারে সংরক্ষণ করা হবে। জাহাজ ছাড়ার স্থানে (পয়েন্টে) ও সেন্টমার্টিনের প্রবেশের স্থানে (এন্ট্রি পয়েন্ট) পর্যটকদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় সার্বিক বিষয় ও যোগাযোগ সমন্বয় করবে। কাজের সুবিধার্থে কমিটি প্রয়োজনে সদস্য বাড়াতে পারবে।’

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন