বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পালিয়েছে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন
বগুড়া অফিস
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নিহতের বোন আশা খাতুন বলেন, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তার ফোনে একটি মিসড কল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি রিসিভ করেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তার গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা যায়।
নিহতের মামি আয়না খাতুন অভিযোগ করে বলেন, পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তার পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, এর আগে তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া-বিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন হওয়া উচিত।
বগুড়া সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।



