টানা দ্বিতীয় দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নিকলীতে
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৩ পিএম
টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে হাওর অধ্যুষিত এই উপজেলায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এদিন দেশের সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
নিকলী আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আক্তার ফারুক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগের দিন রোববার নিকলীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
বেলা সাড়ে ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আজও সারাদেশের মধ্যে নিকলীতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রবিবারের তুলনায় সোমবার শীতের তীব্রতা সামান্য কমলেও জেলার ওপর দিয়ে এখনও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসজুড়ে শীতের প্রভাব অব্যাহত থাকতে পারে এবং শীতের অনুভূতি কমার তেমন সম্ভাবনা নেই।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সড়কে পরিবহনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকেই অল্প সময়ের জন্য কাজে বেরিয়েছেন। ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে অনেকেই আগুন পোহাতে বসেছেন।
দিনমজুর আক্কাস আলী বলেন, ‘শীতে একদিন কাজ পাই, তিনদিন পাই না। গত এক সপ্তাহ ধরে তেমন কাজ হচ্ছে না। ভোরবেলা এসে বসে থেকেও কোনো লাভ হচ্ছে না।’
শহরের আখড়া বাজার এলাকার নির্মাণ শ্রমিক রফিক মিয়া বলেন, ‘শীতে বাইরে দাঁড়ানোই কষ্টকর। তারপরও কাজের খোঁজে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু ঠিকমতো কাজ মিলছে না।’
রিকশাচালক কামাল হোসেন বলেন, ‘শীতে মানুষ ঘর থেকে কম বের হয়। যাত্রী পাচ্ছি না, আয়ও কমে গেছে। খুব কষ্টে দিন কাটছে।’
জেলা শহরের বড় বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা রাকিব হোসেন বলেন, যেভাবে কুয়াশা পড়ছে এর সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। যার কারণে প্রচণ্ড শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের কারণে বাড়ি থেকে আসতে দেরি হওয়ায় দোকান খুলতেও দেরি হচ্ছে। তবে তীব্র শীতের মাঝে এত কষ্ট করে দোকান খুলেও আমাদের কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ শীতের কারণে বাজারে মানুষজন তেমন নেই। যার কারণে বেচাকেনাও তেমন একটা নেই।’
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সারাদিন গরম পোশাক পরে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে মানুষজনকে। সন্ধ্যার পর শহরের বিভিন্ন এলাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে পড়ছে। চিকিৎসকরা শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে গরম কাপড় ব্যবহার, উষ্ণ খাবার গ্রহণ ও গরম পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন।



