Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম

ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ

ছবি : সংগৃহীত

ভোরের আলো ফোটার আগেই যেন থমকে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম। চারদিক জুড়ে ধূসর কুয়াশা, হিমেল বাতাসে জমে আছে কনকনে শীতের নিঃশ্বাস। টানা পাঁচ দিন ধরে সূর্যের মুখ দেখেনি এই জনপদ। কুয়াশার মোটা চাদরে ঢেকে গেছে গ্রাম-শহর, নদী-চর—সবকিছুই।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ছয়টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে আসে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। তবে সংখ্যার হিসাবের চেয়েও এই শীত বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনের বাস্তবতায়।

সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশা আরও ঘন হতে শুরু করে। দিনের বেলাতেও মেলে না সূর্যের দেখা। সারাদিন আকাশ থাকে মেঘলা, আর সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে হিমেল হাওয়ার দাপট। কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে, থমকে যায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

পৌর এলাকার আলুচাষি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ঠান্ডার কারণে নিয়মিত জমিতে যেতে পারছি না। এতে সাময়িক ক্ষতির মুখে পড়েছি। যদিও শীত আলুর জন্য উপকারী, আশা করছি এবার ফলন ভালো হবে।’

অন্যদিকে শীত সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে। সদর উপজেলার পাঁচগাছি এলাকার রিকশাশ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চার দিন ধরে ঠান্ডার কারণে রিকশা চালাতে পারছি না। পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। এখনো কোনো সরকারি সহযোগিতা পাইনি।’

ঘন কুয়াশায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সড়কপথ। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে যানবাহন। ধীরগতির চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রীদের।

শীত নিবারণে অসহায় মানুষ খড়কুটো, শুকনো পাতা ও পুরোনো কাপড় জ্বালিয়ে উষ্ণতা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ আগুনের পাশে বসে কাঁপতে কাঁপতে রাত পার করছেন। তবুও শীতের দাপট কিছুতেই কমছে না।

এদিকে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রতিদিনই ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। চিকিৎসকদের আশঙ্কা—শীত আরও বাড়লে পরিস্থিতি গুরুতর আকার নিতে পারে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, "প্রতিটি উপজেলায় ৬ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে জেলায় ৭ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।"

এই হিমেল সময়ে কুড়িগ্রামের মানুষ তাকিয়ে আছে উষ্ণতার আশায়—একটু সহানুভূতি, একটি কম্বল কিংবা একটি মানবিক স্পর্শের দিকে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন