পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপকূলে মাছ ধরতে গিয়ে সাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে ট্রলার থেকে বাবার ও শুক্রবার ভোরবেলা ডুবচর থেকে ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন—মো. শামীম জোমাদ্দার (৩৪) ও কিশোর সিয়াম জোমাদ্দার (১১)। তারা দুজনই সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোররাতে পায়রাবন্দর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের পাইপ বয়া এলাকায় নোঙর করা অবস্থায় হঠাৎই ঝোড়ো বাতাসের কবলে পড়ে ৬ জেলেসহ এমভি ছিদ্দিক নামের ট্রলারটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার পর জেলে সিদ্দিক জোমাদ্দার (৫৫), মো. শাওন (২৪), মো. রাব্বী (১৮) ও রাসেদ (২০) ট্রলারের ভাসমান অংশ ধরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় সাগরে ভেসে থাকেন। পরে বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয় একটি মাছ ধরা ট্রলার তাদের দেখতে পেয়ে জীবিত উদ্ধার করে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রথমে কুয়াকাটা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসা নিয়ে ৪ জেলে বাড়ি ফিরলেও নিখোঁজ থাকেন বাবা-ছেলে।
তবে দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ থাকা শামীম ও তার ছেলে সিয়ামের সন্ধানে স্বজনরা সাগরে তল্লাশি চালান। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ডুবে যাওয়ার ট্রলারের মধ্যে থেকে বাবা শামীমের মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ছাড়া শুক্রবার ভোরবেলা বঙ্গোপসাগরের পাইপ বয়া এলাকায় ডুবচর থেকে শিশু সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের বাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউপির চরগঙ্গা বাধঘাট এলাকায় বলে জানা গেছে।
নিখোঁজ শামীমের বাবা ও ট্রলারের মালিক মো. সিদ্দিক জোমাদ্দার বলেন বলেন, ‘আমার বড় ছেলে ও নাতি দুজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে এ ধরনের দুর্ঘটনা আর যেন কারও জীবনে না ঘটে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
কুয়াকাটা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘নিখোঁজের বিষয়টি জানার পর মহিপুর কোস্টগার্ড ও রাঙ্গাবালী থানাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে নৌপুলিশের নিজস্ব উদ্ধার সক্ষমতা সীমিত।’
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আমরা জানিয়েছি। যতটুকু জেনেছি হঠাৎ একটা ঝড় এসে ডুবচরে নোঙর করা ট্রলারটি ডুবে গেছে। চারজন জীবিত উদ্ধার হলেও নিখোঁজ বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’



