উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতেই দুই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩০ এএম
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতের ব্যবধানে পৃথক স্থানে দুটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা ক্যাম্পজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকের একটি হাসপাতালে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এবং ব্লকের বাসিন্দাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টার সমন্বিত প্রচেষ্টায় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর না পাওয়া গেলেও হাসপাতালটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এবং ভস্মীভূত হয়েছে মূল্যবান চিকিৎসা সামগ্রী।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে নতুন করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আগমনের পর দাতব্য সংস্থা ওবাট হেলপারস ইউএসএ ‘ওবাট হেলথ পোস্ট’ নামে এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএর অনুদানে, ক্যাম্প প্রশাসনের সহায়তায় ওবাট হেলপারস বাংলাদেশ এটি পরিচালনা করে আসছিল।
ওবাটের হেলথ কো-অর্ডিনেটর ডা. মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকী রাশেদ জানান, আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে পুরো হাসপাতালটি পুড়ে গেছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আশপাশের রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেতেন।
রোহিঙ্গাদের কাছে ‘মালয়েশিয়া হাসপাতাল’ নামে পরিচিত এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পুড়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক আশ্রিত মানুষ। ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, এই হাসপাতালটি আমাদের পরিবারের বড় ভরসা ছিল। পুড়ে যেতে দেখে খুব খারাপ লাগছে, এখান থেকেই আমরা নিয়মিত চিকিৎসা নিতাম।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা জানান, ঘটনাস্থলে একটি ইউনিট কাজ করেছে এবং কেউ আহত হয়নি। আগুন লাগার কারণ তদন্ত শেষে জানা যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে এই ঘটনার প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি ব্লকে আরেকটি অগ্নিকাণ্ডে ৫টি ঘর পুড়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং ১ ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে যায় এবং একজন নিহত হন। শীত মৌসুমে ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আবারও উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।



