নিখোঁজের ২২ দিন পর পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০০ এএম
কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে নিজ বাড়ি যশোরের চৌগাছায় এসে নিখোঁজ ছিলেন আক্তারুজ্জামান (৪৬) নামে এক পুলিশ সদস্য। কোনোভাবেই খোঁজ মিলছিল না তার। এ নিয়ে স্থানীয় থানায় জিডিও করেছিল পরিবার। অবশেষে ২২ দিন পর সন্ধান মিলেছে কনস্টেবল আক্তারুজ্জামানের। তবে জীবিত নয়, উত্তরবঙ্গের জেলা পঞ্চগড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) নিখোঁজের ২২ দিন পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের নয়মাইল গ্রামের একটি আখক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে সেদিন অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার হলেও শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) আক্তারুজ্জামানের পরিচয় শনাক্ত হয়। খবর পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদস্য আক্তারুজ্জামানের স্বজনেরা মরদেহ আনতে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
আক্তারুজ্জামান খুলনা রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। গ্রামের বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জামলতা থেকে নিখোঁজের পর গত ২৮ নভেম্বর তার নিখোঁজের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার।
নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামুন জানান, স্থানীয় পুলিশের পাঠানো পরনের প্যান্ট, শার্ট ও জুতার ছবি দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি যে মরদেহটি আমার বোনের স্বামীর। ইতোমধ্যে আমরা পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। বর্তমানে মরদেহ স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পঞ্চগড়ের পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাড়ে ৯ মাইল এলাকায় স্থানীয়রা একটি আখক্ষেত থেকে আসা দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে মরদেহ দেখতে পায়। পরে থানায় খবর দেয়া হলে তারা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। তবে প্রথমে মরদেহটি অজ্ঞাত হলেও পরবর্তীতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট পরিচয় শনাক্ত করে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় থানার তদন্ত কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক বেলাল হোসেন জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদেরও জানানো হয়েছে। তারা থানায় পৌঁছালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মরদেহটির পরিচয় শনাক্তে একমাত্র সূত্র হয় তার পরনে থাকা আন্ডারওয়ার। যেখানে পুলিশের লোগো ছিল। সেটি একজন পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তার পরনের প্যান্ট, শার্ট ও জুতার ছবি নিহতের স্ত্রীকে দেখালে তিনি সেগুলো তার স্বামীর পোশাক বলে শনাক্ত করেন।
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ২-৩ সপ্তাহ আগে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি প্রায় অর্ধগলিত, তাই এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু, সেটি বুঝা যাচ্ছে না। পুলিশ ও সিআইডি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে যশোরের চৌগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শাহিনা আক্তার গত ২৮ নভেম্বর থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন, আক্তারুজ্জামান গত ২৬ নভেম্বর ৫ দিনের ছুটি নিয়ে চৌগাছায় আসেন। পরে ২৭ নভেম্বর সকালে মহেশপুর যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও তিনি বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। এরপর আমরা জানতে পারি ওই পুলিশ সদস্যের মরদেহ পঞ্চগড়ে পাওয়া গেছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।



