নরসিংদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিতে প্রবাসী নিহত
নরসিংদী প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নরসিংদীর রায়পুরায় ছুটিতে ১৫ দিন আগে দেশে ফিরে গুলিতে নিহত হয়েছে মামুন মিয়া (২৫) নামে এক প্রবাসী। এসময় তার বাবাসহ আরো ১০ জন আহত হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নিলক্ষার দড়িগাঁও ছক্কার বাড়ীর মোড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুন মিয়া (২৫) একই এলাকার আব্দুল আউয়ালের ছেলে ও একজন কুয়েত প্রবাসী ছিলেন। তিনি ২১ নভেম্বর কুয়েত থেকে পাঁচ মাসের ছুটিতে দেশে ফিরেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই নিলক্ষা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শহিদ মিয়া গ্রুপ ও ফেলু মিয়া গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। শহিদ মিয়া গ্রুপে নেতৃত্ব দেন নাজিম উদ্দিন মেম্বার ও ফেলু মিয়া গ্রুপে নেতৃত্ব দেন জবা মিয়া। আর নিহত মামুন ছিলেন নাজিম উদ্দিন গ্রুপের এবং জবা মিয়ার ভাতিজির জামাতা। সে সুবাদে মামুন দুই গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা করতে তার শ্বশুর বাড়ী গেলে তার শ্বশুর বাড়ীর লোকদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেখানে তার বাবা আউয়াল মিয়াও উপস্থিত হন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন মামুনকে গুলি করে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে মামুনের বাবা আউয়ালসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় মামুনের বাবা আউয়াল মিয়া (৫৫) এবং পরশ মিয়া নামে আরও দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আহতরা পুলিশী গ্রেপ্তার এড়াতে গোপনে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
নিহত মামুনের বোন সোমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, পনের দিন পূর্বে পাঁচ মাসের ছুটি নিয়ে কুয়েত থেকে দেশে ফিরেন আমার ভাই মামুন। আমাদের নিলক্ষা দড়িগাও ও দড়িগাও ফেলুর বাড়ীর মধ্যে পূর্ব থেকেই আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। আর সে বিরোধ মিমাংসার জন্যই তার শ্বশুর বাড়ী দড়িগাও ছক্কার বাড়ীতে যান। সেখানে আমার ভাইয়ের আপন শ্যালক এনামুল, সোহাগ ও শ্বশুর ইসব এবং চাচা শ্বশুর জবা মিয়া আমার ভাই ও বাবাকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে। এতে আমার ভাই নিহত হয় এবং আমার বাবা ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানা কবির বলেন, নিলক্ষার সংঘর্ষের ঘটনায় বাবা ও ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাই। বাবার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত মামুনের পেটে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি, আঘাতের ধরণ দেখে গুলি মনে হচ্ছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন মারা গেছে। এদের মধ্যে আত্বীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।



