শেরপুরে গৃহবধূর আত্মহত্যা: ওসির মানবিক আহ্বান
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আঁশগ্রাম এলাকায় সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মো. আমিনুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. আলেয়া বেগম (৩৩) গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত আলেয়া বেগম একই ইউনিয়নের বড়াইদহ গ্রামের মো. আলম মন্ডলের মেয়ে। প্রায় ২০ বছর আগে তার বিয়ে হয়। তিন সন্তানের জননী তিনি, যার মধ্যে সবচেয়ে ছোট সন্তানের বয়স মাত্র ৫ বছর।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আলেয়া বেগম তার ৫ বছরের শিশুকে খাটে বসানোর পর টিনের ঘরের তীরের সাথে রশি বেঁধে আত্মহত্যা করেন। তাদের ভাষ্য, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি মাথার সমস্যার কারণে নিজের ছাগলকেও পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলেন বলে প্রতিবেশীরা জানান। তারা ধারণা করছেন—মানসিক অস্থিরতার কারণেই তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে শেরপুর থানার এসআই শাহদত হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। পরে বিকেল ৪টার দিকে থানার ওসি মো. ইব্রাহীম আলী ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ নেন।
এ সময় হৃদয়বিদারক একটি দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। নিহত আলেয়ার বড় ছেলে ওসির পা জড়িয়ে ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে— “স্যার, আমার মায়ের লাশ নিয়ে যাবেন না।”
শিশুটির আহাজারিতে উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে ওসি ইব্রাহীম আলী সকলকে উদ্দেশ্য করে বলেন—
“আপনারা কেউই আত্মহত্যা করবেন না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্যা হলে আত্মহত্যার পথ বেছে না নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ান। দেশে কাজের অভাব নেই। মানসিক সংকট যাই হোক, জীবন কখনোই নষ্ট করা উচিত নয়।”
তিনি আত্মহত্যা প্রতিরোধে স্থানীয় মসজিদের ইমামদের খুতবায় সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান।
ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত প্রক্রিয়া অনুযায়ী লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।



