দীর্ঘ ৬ মাস পর বালিখলা-শান্তিপুর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ভারী বর্ষণের কারণে কিশোরগঞ্জের হাওরের ধনুসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বিভিন্ন ফেরিঘাটে পানি উঠে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এতে সড়কপথে জেলা শহরের সঙ্গে হাওরের সকল ধরনের যাতায়াত হয়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এই রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রালারে নদী পারাপার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস বন্ধ থাকার পর কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের বালিখলা-শান্তিপুর-মিঠামইন রুটের দুটি ফেরি চলাচল আবার চালু হয়েছে। ফেরি চালু হওয়ায় হাওরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ মে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কিশোরগঞ্জের ঘোরাউত্রা, ধনুসহ কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। পানিবৃদ্ধির ফলে হাওরের সঙ্গে করিমগঞ্জের বালিখোলা ও চামড়াঘাট, মিঠামইনের শান্তিপুর ফেরিঘাট, ইটনার বড়িবাড়ি ও বলদা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক তলিয়ে যায়। এসময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর হাওরাঞ্চলে চলাচল করা ফেরিগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয়। ফেরি বন্ধ থাকায় অনেকেই ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সাহায্যে কোনোমতে শহরে যাতায়াত করে হাওরের মানুষজন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার বালি খোলা হয়ে হাওরের তিন উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন হাজার হাজার মানুষ। আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বালিখলা-শান্তিপুর-মিঠামইন রুটে ফেরি চলাচল আবার চালু হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পানি কমে যাওয়ায় ফেরি সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমোদনে মেসার্স ঐশী এন্টারপ্রাইজ আগামী তিন বছর ফেরি ও টোল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে।
ইটনা উপজেলার রায়টুটি ইউনিয়নের সোয়াইর গ্রামের বাসিন্দা হাকিম মিয়া বলেন, ভারী বৃষ্টিতে হাওরের নদীতে প্রতিদিন পানি বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সাব-মার্সিবল সড়ক ডুবে যায়। ঘাটগুলোতেও পানি উঠে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হয়েছে। অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস পর আজ থেকে বালিখলা-শান্তিপুর-মিঠামইন রুটের দুটি ফেরি চলাচল আবার চালু হয়েছে। ফেরি চালু হওয়ায় আমাদের স্বস্তি ফিরেছে।
মিঠামইন উপজেলার ঢাকেশ্বর গ্রামের কৃষক আমির হোসেন বলেন, আজকে বাড়ি থেকে এসে দেখি ফেরি চলাচল করছে, এখন সহজেই ফেরি দিয়ে নদী পার হয়ে গাড়িতে করে শহরে যেতে পারছি। ফেরি বন্ধ থাকায় নৌকা দিয়ে কষ্ট করে শহরে যেতে অনেক কষ্ট হতো।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা- রুটটি আরও আধুনিক হলে বিশেষ করে ডিজিটাল টিকিটিং চালু হলে যাত্রী ভোগান্তি কমে যাবে। হাওরাঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ এই রুটকে আরও সুবিধাজনক করতে প্রশাসন, ইজারাদার এবং স্থানীয়দের আগ্রহ বাড়ছে।
টোল ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানটির মালিক আজহারুল ইসলাম ফকির রতন বলেন, যাত্রীদের সুবিধাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়ম মেনে পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সময়সূচি বজায় রাখা, ভিড় কমানো এবং ঘাট এলাকায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, ঘাটগুলোর সেবার মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের নিয়মিত তদারকি চলছে।



