নরসিংদীতে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে ‘আহত ৩৫’, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
নরসিংদী প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত
নরসিংদীতে বিএনপির অঙ্গসংগঠন তাঁতীদলের নেতাকর্মীদের সাথে জামায়াতের নেতাকর্মীদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে জামায়াতের ৩০ জন সহ দুই পক্ষের ৩৫ জন আহত হয়েছে বলে দাবী করেছেন দুই পক্ষ। তবে পুলিশ বলছে,মারামারির ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছে।
এদিকে ঘটনা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াত। আজ বুধবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর মেহেরপাড়া মাজার বাসষ্ট্যান্ড নিহার উদ্দিন চেয়ারম্যান মার্কেট এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে জামায়াত। এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন মেহেরপাড়া ইউনিয়ন তাঁতীদলের সভাপতি বখতিয়ার হোসেন ও ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারন সম্পাদক দুখু মিয়া। তাদেরকে গুরুত্বর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা যায়, নরসিংদীর মেহেরপাড়া মাজার বাসষ্ট্যান্ড নিহার উদ্দিন চেয়ারম্যান মার্কেট এর সামনে জামায়াত ইসলামীর নির্বাচনী সভা চলছিল। ওই সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কিছু বক্তব্য রেখেছেন এক বক্তা। বিষয়টি নিয়ে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন তাঁতীদলের সভাপতি বখতিয়ার হোসেন প্রতিবাদ জানায়। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে সভা শেষে মারামারিতে জড়িয়ে পরেন দুই পক্ষ।
ঘটনার পর পরই জামায়াতে ইসলাম এর নির্বাচনী সভায় হামলার অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন জামায়াতের দাড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী ও নরসিংদী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আমজাদ হোসাইন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবী করেছেন, নরসিংদী -২ (পলাশ) নির্বাচনী এলাকায় জামায়াতের নির্বাচনী সভায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় ছাত্রশিবির সহ ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এঘটনার পর হতে জামায়াতের ৩ জন নেতাকর্মী নিখোঁজ বলেও দাবি করেন তিনি। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মন্দীতে জেলা জামায়াত কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় মেহেরপাড়া ইউনিয়নের শেখেরচর বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত সভায় ইউনিয়ন তাঁতীদল নেতা বখতিয়ার হোসেন বখতিয়ারের নেতৃত্বে এ হামলা হয়।
তিনি আরো বলেন, শুরু থেকেই বিএনপির কিছু নেতাকর্মী ওই সভায় বাধা সৃষ্টি করছিলেন। তার বক্তব্য চলাকালীন মঞ্চের পেছনে গিয়ে গালিগালাজও করেন তারা। স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে প্রথমে তারা সেখান থেকে সরে গেলেও সভা শেষে ফের ৭০/৮০ জন বিএনপির নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরমধ্যে ৭ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো জামায়াতের হামলায় বিএনপির ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইউনিয়ন বিএনপি। মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অব্দুর রশিদ মিয়া জানান, বিএনপির সাথে জামায়েতের কোন সংঘর্ষ হয়নি। সেথানে জামায়েতের একটি প্রোগ্রাম থেকে বিএনপিকে নিয়ে কুরুচিপর্ন্ন বক্তব্য দিয়েছেন জামায়াতের এক নেতা। সেখানে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন তাঁতীদলের সভাপতি বখতিয়ার হোসেন এর দোকান। সে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। পরে প্রোগ্রাম শেষে তারা এসে বখতিয়ারের উপর আক্রমন করেন। ওই সময় তাকে বাচাতে তার ছেলে সহ কয়েক জন এগিয়ে যায়। পরে জামায়াতের নেতাকর্মীদের হামলায় তারা আহত হয়। এদের মধ্যে বখতিয়ার সহ ২ জনের অবস্থা গুরুত্বর। মুমুষ অবস্থায় বক্তিার সহ ২ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন,জামায়াতের একটি সভায় বিএনপিকে নিয়ে নানা কথাবার্তা বলছিল। সেটা বিএনপির লোকজন পজিটিভলি নেয়নি। তাৎক্ষনিক বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায় তাতীদল নেতা। এই নিয়ে দুই পক্ষ কথাকাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ায়। এতে ৫ জনের মতো আহত হয়েছে।



