Logo
Logo
×

সারাদেশ

অকেজো পড়ে আছে কোটি টাকার সেতু!

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম

অকেজো পড়ে আছে কোটি টাকার সেতু!

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটিতে কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কোনো কাজে আসছে না ওই অঞ্চলের মানুষের। আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় সেতুটি অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে জন্মেছে শেওলাসহ নানাবিধ গুল্মলতা, খসে পড়ছে পলেস্তারাও। কোটি টাকার পাকা সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে কেবল স্মারক হয়ে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে চরম্বা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের হিন্দুপাড়ায় জামছড়ি খালের ওপর ৯৯ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট প্রস্থের সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব পান কাশেম ব্রাদার্স নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে লোহাগাড়া সদরের মিনহাজ উদ্দীন নামক এক ব্যক্তি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন। ২০২৩ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।

নির্মাণের দীর্ঘ সময় পরও সেতুর উভয়পাশের সংযোগ সড়কের কাজ (এপ্রোচ) শেষ না হওয়ায় কার্যত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। সেতুটি এখন পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। ফলে দুর্ভোগও শেষ হচ্ছে না হাজার হাজার মানুষের।

সেতুটির সংযোগ সড়কের অভাবে চরম্বা ইউনিয়নের মজিদারপাড়া, ওয়াহিদারপাড়া, লালারখীল, দিঘীরপাড়, পদুয়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক তাছাড়া ইউসুফ শাহ (র.) সড়ক হয়ে পার্বত্য বান্দরবানের টংকাবতী এলাকার প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র সড়ক। কৃষি নির্ভর এ এলাকায় উৎপাদিত বিভিন্ন মৌসুমি ফলমূল, শাক-সবজি, ধান বাজারজাতকরণের একমাত্র সড়ক এটি। বিকল্প পথে এ কৃষিপণ্যগুলো পরিবহণ করতে হলে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে নিয়ে যেতে হয়। যেটি কৃষকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। প্রতিদিন হাজারো শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও রোগীদের বালুকাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পুরো অঞ্চলের মানুষ।

সরেজমিন দেখা যায়, পাকা সেতুটির খুব কাছেই রয়েছে সড়ক। উভয়পাশে ১৫০ ফুটের মত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলেই সেতুটি মূল সড়কের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে। তবে সেটি না করায় পাকা সেতুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পাশে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে নির্মিত একটি বেইলি সেতু দিয়ে লোকজন চলাচল করছে।

স্থানীয়রা জানান, আগে এই এলাকাটিতে সেতু ছিল না। এ কারণে এলাকাবাসীকে দুর্ভোগে পড়ত হতো। দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয় কয়েকজন বিত্তশালীদের সহযোগিতায় খালের ওপর পাঁচ বছর আগে বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পাশের বেইলি সেতুটি বর্তমানে দুর্বল হওয়ায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ, তা ছাড়া বেইলি সেতুটি নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে পানিতে ডুবে যায়। তখন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুত পাকা সেতুটি সড়কের সঙ্গে সংযোগ করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি ও জানান তারা।

চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন বলেন, প্রকল্প বরাদ্দেই সংযোগ সড়কের বরাদ্দ থাকে। ঠিকাদারের দায়িত্ব ছিল সেতুটি সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া। আড়াই বছর আগে সেতুটি নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়কে অভাবে এখানকার হাজার হাজার গ্রামবাসীকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে সংযোগ সড়ক করা না গেলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জনদুর্ভোগে পড়বে এসব এলাকার বাসিন্দারা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সেতুর নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা মিনহাজ উদ্দিন বলেন, সেতুটির প্রস্থ ১৮ ফুট। তবে প্রকল্পে সংযোগ সড়কের প্রস্থ আছে ১২ ফুট। আমরা দুইবার কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে ফিরে এসেছি।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, সেতুর প্রস্থের সমান ১৮ ফুট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে এ কারণেই সংযোগ সড়ক করা হয়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ জাকির বলেন, আমার যোগদানের আগেই সেতুটি উদ্বোধন করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পরপরই সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে বলে ও জানান তিনি

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন