একসঙ্গে জন্ম নেওয়া সেই পাঁচ শিশু হাসপাতালে ভর্তি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৮ এএম
ছবি : সংগৃহীত
বরিশালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া পাঁচ নবজাতক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। জন্মের দুই মাস পর তারা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) তাদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শিশুদের বাবা সোহেল হাওলাদার বলেন, কয়েক দিন ধরে পর্যায়ক্রমে সন্তানরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বাচ্চারা যত বড় হচ্ছে, খরচও তত বাড়ছে। আমার সামান্য আয় দিয়ে তাদের ভরণপোষণই কঠিন, চিকিৎসা ব্যয় তো আরও দূরের কথা। এখন সহায়তা না পেলে চিকিৎসা করানোর মতো কোনো উপায় দেখছি না।
সোহেল বলেন, পাঁচ সন্তান জন্মের পর এসএসসি ৮৪ ব্যাচের গড়া মানবিক সংগঠন ‘ইভেন্ট ৮৪ ’ এর উদ্যোগে একটি গাভিসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। তবে পাঁচ ভরণপোষণ ও চিকিৎসার ব্যয় বহন করা এখন তাঁদের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোহেল হাওলাদারের স্ত্রীর নাম লামিয়া আক্তার। তাদের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরকাঠি গ্রামে। গত ৬ অক্টোবর বরিশাল নগরের হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম দেন লামিয়া আক্তার। তাদের নাম রাখা হয়—হাসান, হোসাইন, মোয়াছিন, হাবিবা ও উমামা। একসঙ্গে পাঁচ শিশুর জন্মের খবরটি সারা দেশে ওই সময় আলোড়ন তোলে।
শিশুদের মা লামিয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন তাদের দেখভাল করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। এক কৌটা দুধ দুই দিনের বেশি চলে না। প্রতিদিন ১০টি ডায়াপার লাগে। পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমাদের স্বল্প আয়ের পরিবার। এত ব্যয় করে শিশুদের চিকিৎসা করাটা দুরূহ হয়ে পড়েছে। জানি না কীভাবে কী করব।
এদিকে পাঁচ নবজাতক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়ে বিকেলে হাসপাতালে যান বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ কে এম আখতারুজ্জামান তালুকদার ও সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ। তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পাঁচ শিশুর চিকিৎসা এবং তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেন।
সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, পাঁচ নবজাতক জন্মের পরও আমরা পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আসলে পরিবারটি স্বল্প আয়ের হওয়ায় পাঁচ নবজাতকের ভরণ-পোষণ তাঁদের জন্য অনেকটাই অসাধ্য হয়ে পড়েছে। এরপর অসুস্থ হওয়ায় তাঁদের ওপর বাড়তি চাপ পড়েছে। আমরা পাঁচ শিশু হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে গিয়েছিলাম। শিশুদের বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে এবং ১৫ দিনের দুধ সরবরাহ করা হয়েছে। তবে এই পরিবারটির দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা দরকার।



