বাঞ্ছারামপুরে থামছে না মাটি খেকোদের দৌরাত্ম্য
মোহাম্মদ আলী, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সোবহানিয়া ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার প্রায় ৩৬০ শতক জমি নদী ভাঙন ও বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চর শিবপুর মৌজার হালে বাদিয়ামারা চরের প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিও একই ঝুঁকিতে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) মাদরাসার শিক্ষকমণ্ডলী ভাঙন এলাকায় জরুরিভিত্তিতে পরিদর্শন করেন। তারা ডজনখানেক মাটি কাটার বোট ও শতাধিক শ্রমিককে মাদরাসার জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার দৃশ্য দেখতে পেয়ে ধাওয়া দিলে নৌকাসহ শ্রমিকরা পালিয়ে যান।
দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধ দলের একটি চক্র অবৈধভাবে নদীর চর কেটে প্রতিদিন প্রায় ডজনখানেক নৌকায় মাটি উত্তোলন করে বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গোপনে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে সোবাহানিয়া মাদরাসার নিজস্ব তিন শ শতাংশ জমি ও চরের বিস্তীর্ণ ভূমি দ্রুত ভাঙনের মুখে পড়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রিন্সিপাল মাওলানা রুহুল আমীন আব্দুল্লাহ, ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।
মাওলানা রুহুল আমীন আবদুল্লাহ বলেন, এই জমি শুধু মাদরাসার নয়—এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সকলের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবৈধ মাটি ব্যবসার নেটওয়ার্কটি দীর্ঘদিন ধরে একটি কুচক্রী মহল সংগঠিতভাবে মাদরাসা ও সরকারি জমি কেটে মাটি ইটভাটায় সরবরাহ করছে। ইটভাটাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন এম. এস. কে ইটভাটা। তার বিরুদ্ধে নদী দখল করে ইটভাটা নির্মাণের অভিযোগও রয়েছে।
এ ছাড়া আশপাশ এলাকার আরো কয়েকটি ইটভাটায় ও নিয়মিত মাটি সরবরাহ করে আসছে এই দুর্বৃত্তরা।
সোবহানিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মোশাররফ হোসেন রিপন বলেন, ‘মাটিখেকো একটি সন্ত্রাসী চক্র বহু বছর ধরে মাদরাসা ও সরকারি জমির মাটি লুট করে আসছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বাঞ্ছারামপুর প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওসি হাসান জামিল খান বলেন, আজ একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস আরা বলেন, ‘আজ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অভিযোগ করেছেন। মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগ তদন্ত করে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



