চট্টগ্রামে ২০০ পোশাককারখানা ভূমিকম্প ঝুঁকিতে
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
দেশের রপ্তানি আয় ও অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি তৈরি পোশাকশিল্পে এবার দেখা দিয়েছে ভূমিকম্পের শঙ্কা। বিশেষ করে চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলে প্রায় ২০০ কারখানা গুরুতর ঝুঁকিতে, যেখানে লক্ষাধিক শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন। সাম্প্রতিক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।
চট্টগ্রামে বিজিএমইএ–তালিকাভুক্ত কারখানা রয়েছে ৩৪৩টি, কালুরঘাট বিসিক ও বায়েজিদ শিল্পাঞ্চলে আরও প্রায় ২০০ কারখানা চালু আছে। সঙ্গে বেপজার আওতায় শতাধিক কারখানা মিলিয়ে মোট ৫ শতাধিক পোশাক কারখানা চলছে চট্টগ্রামে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের হিসাবে ১৯৩টি কারখানা জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার (এনআই) ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে।
চট্টগ্রাম কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান জানান, এনআই তালিকাভুক্ত কারখানাগুলোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট, ভূমিকম্প ঝুঁকি–নিরসন এবং জরুরি সেফ এক্সিট নিশ্চিত করা জরুরি। ঝুঁকিপূর্ণ ১৯৩ কারখানার মালিকদের ইতোমধ্যে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।
চট্টগ্রাম শিল্পপুলিশের সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ঢাকার সাম্প্রতিক প্রাণহানির ঘটনার পর ভূমিকম্প ঝুঁকি নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। পোশাক কারখানায় বেশি শ্রমিক কাজ করায় এসব কারখানা ঝুঁকিতে থাকলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।
২১ নভেম্বর দেশের ইতিহাসে অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকম্পে অনেক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বিজিএমইএ তাদের সব সদস্য কারখানাকে জরুরি নির্দেশনা পাঠায়। তাতে ভবনে ফাটল বা স্ট্রাকচারাল ত্রুটি চিহ্নিত করতে দ্রুত একজন স্ট্রাকচারাল বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি লিফট, বয়লার রুম, জেনারেটর রুম, সাব-স্টেশনেও দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএর চিঠিতে বলা হয়েছে, কারখানাগুলোতে বহুসংখ্যক শ্রমিক কাজ করেন এবং মেশিনারিজের কারণে ভবনগুলোতে নিয়মিত কম্পন তৈরি হয়। লিফট, জেনারেটর ও সাব-স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মুহূর্তেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বড় ভূমিকম্পের পর আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের সম্ভাবনা থেকে যায়—যা জীবন ও সম্পদের জন্য হুমকি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ঢাকার মতো আরেকটি ভূমিকম্প হলে বহু কারখানা ও ভবন ধসে পড়তে পারে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শ্রমিকরা। দেশের সব পোশাক কারখানাকে ঝুঁকিমুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
বিজিএমইএ পরিচালক ও ক্লিফটন গ্রুপের সিইও মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তায় কোনো ছাড় নয়। সেজন্যই মালিকদের চিঠি দিয়ে সচেতন করা হয়েছে এবং কারখানাগুলোকে আপডেট রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।



