১৩ বছর ধরে অচল দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূকম্পন যন্ত্র
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩০ এএম
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্রটি গত ভূমিকম্পের সময় কোনো পূর্ব সংকেত বা কম্পনের তথ্য দিতে পারেনি। প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত এ যন্ত্রটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের হর্টিকালচার বিভাগের সামনে সিমেন্টের ছাউনিযুক্ত একটি ঘরের মাটির নিচে স্থাপন করা রয়েছে ফ্রিকোয়েন্সি-নির্ভর এ ভূকম্পন যন্ত্র। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় কন্ট্রোল ইউনিট বা ডিসপ্লে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, কন্ট্রোল ইউনিটসহ পুরো যন্ত্রটিই সম্পূর্ণ অচল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতারের তত্ত্বাবধানে দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ যন্ত্র স্থাপন করা হয়। দাবি ছিল, যন্ত্রটি মাটির উচ্চতার পরিবর্তন ও ভূমিকম্পের মাত্রা রেকর্ড করতে সক্ষম হবে। প্রথম বছর সচল থাকলেও পরে পুরোপুরি অচল হয়ে যায় যন্ত্রটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস এম তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী এখনো ভূমিকম্পের আগাম বার্তা দেওয়ার সক্ষম কোনো যন্ত্র নেই। আমাদের যন্ত্রটি পুরনো ও এনালগ পদ্ধতির, ফলে তেমন কার্যকর তথ্য পাওয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, গবেষণা ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশে উন্নত সতর্কীকরণ ব্যবস্থা তৈরি সম্ভব।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হেমায়েত জাহান জানান, এটি প্রকৃতপক্ষে সিসমোগ্রাফ নয়, বরং ভূমির ওঠানামা মাপার যন্ত্র। তবে ভূকম্পনও নির্ণয় করা যায়। বর্তমানে যন্ত্রটি সম্পূর্ণ অচল, তবে আধুনিক যন্ত্র স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুততম সময়ে এখানে একটি অত্যাধুনিক ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করতে হবে—যা প্রাণ বাঁচাতে ভূমিকা রাখবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকির মুখে থাকা লাখো মানুষের।



