নরসিংদীতে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৫, শতাধিক আহত
নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম
প্রতিদিনের মতোই ব্যস্ততা আর কোলাহলে শুরু হয় নরসিংদীর জীবনযাত্রা। নরসিংদীতে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে গোটা জেলা কেঁপে ওঠে। মুহূর্তেই আতঙ্কে মানুষ ভবন থেকে বের হয়ে সড়কে ছুটে আসে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল প্রথমে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল বলা হলেও পরে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, কেন্দ্রস্থল ছিল মাধবদী এলাকা।
এই ভূমিকম্পে পাঁচজন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। জেলার বিভিন্ন স্থানে ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নরসিংদী শহরসহ প্রায় সব উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
নিহতদের পরিচয়:
দেলোয়ার হোসেন (৩৭) ও তার শিশু সন্তান ওমর (১২), গাবতলী, সদর উপজেলা
কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫), মালিতা গ্রাম, চরসিন্দুর ইউনিয়ন, পলাশ
নাসির উদ্দিন (৬০), নয়াপাড়া গ্রাম, ডাঙ্গা ইউনিয়ন
ফোরকান মিয়া (৪৫), আজকিতলা গ্রাম, জয়নগর ইউনিয়ন, শিবপুর
ভূমিকম্পে গাবতলী এলাকায় নির্মাণাধীন ছয়তলা ভবনের দেয়াল ধসে পড়লে দেলোয়ার হোসেন ও তার সন্তানরা আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়। একইভাবে পলাশে মাটির ঘর ভেঙে কাজেম আলী, ডাঙ্গায় আতঙ্কে দৌড়ানোর সময় পড়ে গিয়ে নাসির উদ্দিন এবং শিবপুরে গাছ থেকে পড়ে ফোরকান মিয়া মারা যান।
এদিকে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।
ঘোড়াশাল এলাকায় ডেইরি ফার্ম, ছয়টি বাড়ি ও একটি সাততলা শপিংমলে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাজারের দোকানপাটে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ভূমিকম্পে তাদের দোকানের মালামাল ভেঙে পড়েছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালে অর্ধশতাধিক আহত চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম বলেন, জেলা পুলিশ সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানান, নিহতদের পরিবারকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এই ভয়াবহ ভূমিকম্পে নরসিংদী জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।



