Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুয়েতের জাল ভিসায় ইটনার ৫ দিনমজুরকে নিঃস্ব করলেন দালাল হেলাল সাধির

Icon

কিশোরগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০২:১৩ পিএম

কুয়েতের জাল ভিসায় ইটনার ৫ দিনমজুরকে নিঃস্ব করলেন দালাল হেলাল সাধির

ছবি : দালাল হেলাল সাধির

কুয়েতের চাকরির ভিসা পাবেন এই আশায় জমি বিক্রি করেছেন, ধারদেনা করেছেন, অনেক স্বপ্ন গুছিয়েছেন। কিন্তু সবকিছু শেষ হয়ে গেল এক দালালের প্রতারণায়। জাল ভিসার ফাঁদে পড়ে তারা হারালেন মোট সাড়ে ৩২ লাখ টাকা। আজ এই পাঁচ পরিবার পুরোপুরি পথে বসে গেছে। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা ইটনার লাইমপাশা গ্রামের পাঁচ দিনমজুর জীবনের মোড় ঘোরানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন।

করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের দালাল হেলাল উদ্দিন সাধির তাঁদের দেখিয়েছিলেন কুয়েতের ওয়েল কোম্পানিতে চাকরির স্বপ্ন। তার কথায় বিশ্বাস করে শরীফ মিয়া (৪৩), মোশাররফ হোসেন (৪৪), বাবলু মিয়া (৪০), লুসা মিয়া (৩৫) ও সানাউল করিম (৩১) একে একে তুলে দেন সাড়ে ৩২ লাখ টাকা।

হেলাল তাদের কিশোরগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তিন দিনের ট্রেনিং করান। কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ফিঙ্গারও নেওয়া হয়—যা দেখে তারা আরও নিশ্চিত হন, সবকিছু ঠিক আছে। গত ৭ জুলাই হেলালের কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার কানিকাটা এলাকার ভাড়া বাসায় নগদ টাকা পরিশোধও করা হয়। এরপরই শুরু হয় দুঃস্বপ্ন।

সময় গড়াতে গড়াতে তারা জানতে পারেন ভিসা সবই জাল। কুয়েতে কেউ তাদের নেবে না, হেলাল টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। বরং টাকা চাইতে গেলে উল্টো হামলার মুখে পড়তে হয় তাদের। অভিযোগ রয়েছে—হেলালের ছেলে রিয়ান প্রভাব খাটিয়ে শরীফ মিয়াকে মারধর করে এবং জোর করে টাকা ছিনিয়ে নেন। এছাড়াও একদিন ডিবি পুলিশের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও উঠেছে।

ভিসার কপি যাচাই করে সব মিথ্যে প্রমাণিত হলে হতভম্ব হয়ে যান পাঁচ পরিবার। বিদেশে যাওয়ার আশায় জমি বিক্রি, গরু-ছাগল বিক্রি, পাওনাদারের কাছে ধার সব মিলিয়ে এখন তারা নিঃস্ব।

ভুক্তভোগী শরীফ মিয়ার বলেন, “জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে ভিসা নিয়েছিলাম। এখন ঘরে খাবার নেই। পরিবার না খেয়ে দিন কাটায়। টাকা না পেলে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছুই করার থাকবে না”

আরেক ভুক্তভোগী মোশাররফ হোসেনের বলেন, “হেলালকে সবাই বিশ্বাস করাই ছিল ভুল। এখন দেখি আমরা গরিব বলে আমাদের কথা কেউ শুনতেই চায় না।”

ভুক্তভোগী বাবলু মিয়া বলেন, “আমাদেকে তিনদিনের সরকারি ট্রেনিংও ফিঙ্গার সব করানো হয়েছিল। কিছুই বুঝিনি। এখন সব শেষ।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান বলেন, “এই পাঁচ পরিবার এখন পুরোপুরি নিঃস্ব। টাকাও নেই, জীবনে দাঁড়ানোর ভরসাও নেই। পরিস্থিতি এমন যে, তাদের বাঁচার আর পথ নেই।”

এদিকে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সাধির পলাতক। তার ছেলে রিয়ানের মোবাইল নাম্বার কল দিলল তিনি “রং নাম্বার” বলে ফোন কেটে দেন।

কিশোরগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাভেদ রহিম ব্যাখ্যা করেন, “পাসপোর্ট থাকলেই ট্রেনিং নেওয়া যায়। ভিসা দেখে ট্রেনিং দিই না। কেউ ট্রেনিংয়ের সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করলে আমাদের জানারও সুযোগ নেই।”

এ বিষয়ে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসার আলী আকবর সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, “ভিসা যাচাই করা আমাদের কাজ নয়। আমরা শুধু ফিঙ্গার নিই। কেউ প্রতারণার শিকার হলে অভিবাসন আইনের আশ্রয় নেওয়াই উপায় রয়েছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন