কিশোরগঞ্জে শিক্ষকদের কর্মবিরতি, অভিভাবকদের শঙ্কা
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
১০ম গ্রেডে বেতন উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবিতে কিশোরগঞ্জে দ্বিতীয় দিনের মত কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়,ক্লাসরুম ফাঁকা, শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় জেলার ১ হাজার ২৫৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ আছে।
কর্মবিরতির কারণে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে পাঠ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা যারা স্কুলে এসেছিল তারাও ক্লাস না হওয়ায় ফিরে যায়।
এদিকে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই হিসেবে মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি আছে পরীক্ষার। এমন সময়ে শিক্ষকরা দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নামায় এবং সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন অভিভাবকরা ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী তায়িবা আক্তার বলেন, আমরা জানতাম না আজ স্কুলে ক্লাস হবে না। এসে দেখি স্যাররা বসে আছেন, তাই আমরা খেলাধুলা করছি।
শিক্ষার্থী আরমান বলেন, স্যারদের দাবি না মানলে স্যাররা ক্লাস নেবেন না। আমরা চাই তাদের দাবি পূরণ হোক, তাহলে স্যাররাও খুশি হয়ে ক্লাস নেবেন।
হঠাৎ কিরে শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। ফারুক আহমেদ নামে এক অভিভাবক বলেন, হঠাৎ করে শিক্ষকরা কর্মবিরতি করায় ছাত্ররা স্কুলে গিয়ে ফিরে আসছে। সামনে পরীক্ষা, এতে ওদের অনেক ক্ষতি হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কিশোরগঞ্জ সভাপতি স্বপন কুমার বর্মন বলেন, শিক্ষকদের এই দাবি সরকার মেনে নিক। যাতে প্রত্যেক শিক্ষক তাদের কর্মজীবনে ফিরে আসতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পড়ালেখা করতে পারে সেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
কর্মবিরতি পালনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, আমাদের তিন দফা দাবি বিশেষ করে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য এই কর্মসূচি চলছে। কেন্দ্রের আন্দোলনে অনেক শিক্ষক পুলিশি লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন। সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়টি দেখা। যত তাড়াতাড়ি দাবি মানবে, তত দ্রুত আমরা ক্লাসে ফিরব।
কর্মবিরতি পালনকারী আরেক শিক্ষক জানান, পাঠদান সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, এটা সত্যি। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতা খুবই কম। দাবি মেনে নিলে শিক্ষার্থীদের এই সাময়িক ক্ষতি আমরা পরবর্তীতে পুষিয়ে দেব।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান ও চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্ত মজিব আলম জানান, জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ২৫৮টি। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদরে রয়েছে ১৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।



