রাকসুর ফান্ডের ২২ বছরের আয়ের হিসাব নেই, অভিযোগ ভিপির
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
ছবি : যুগেরচিন্তা
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষ ১৯৯০ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাকসু প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের থেকে নেওয়া হয় নির্দিষ্ট একটি অর্থ।
কিন্তু ৯০’এর পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রাকসুর ফান্ডের উপার্জিত অর্থের কোনো হিসাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাকসুর কোষাধ্যক্ষ দিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১২টায় রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
মোস্তাকুর বলেন, ‘৩৫ বছর পর নির্বাচন হয়েছে। এই বছরগুলোতে হিসাব অনুযায়ী অনেক অর্থ থাকার কথা। কিন্তু সেই টাকার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব আমরা পাচ্ছি না। শিক্ষার্থীদের আস্থা রাখতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের ইশতেহার পূরণ কীভাবে করবে এটা নিয়ে শঙ্কায় পড়ে গেছি। তবে, আমরা শুধুমাত্র তহবিলের উপর নির্ভরশীল না থেকে বিভিন্ন দাতা সংস্থাসহ অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ এনে কাজ করতে চাই।’
ভিপি আরো বলেন, ‘শির্ক্ষাথীদের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। এর আগে কে ভিসি ছিল, কে কোষাধ্যক্ষ ছিল তা আমাদের দেখার বিষয় না। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত উপার্জিত অর্থের হিসাব দিতে পারলেও ১৯৯০ এর পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উপার্জিত অর্থের কোনো হিসাব দিতে পারছেন না তারা।
মানে, তারা রাকসুর ফান্ডের অর্থের অসম্পূর্ণ হিসাব দিচ্ছে। আমরা চাই পূর্ণাঙ্গ হিসাবটা আমাদের জানাক এবং ৩৫ বছরে এত টাকা থাকার কথা কিন্তু এখন এই পরিমাণ টাকা আছে। অর্থাৎ বর্তমানে ফান্ডে কত টাকা আছে সেটা আমাদের বলুক। তাহলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে।’
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এজিএস এস এম সালমান সাব্বির। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাকসু প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাকসুর মেয়াদকাল ১ বছর। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তড়িৎ গতিতে ইশতেহারগুলো পূরণ করতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য রাকসু তহবিলে ব্যবহার উপযোগী যে অর্থ প্রয়োজন তা আমরা বুঝিয়ে পাই নি। গতকাল প্রথম অধিবেশনে আমরা আশা করেছিলাম বিগত বছরগুলোর ব্যয়ের অডিটসহ আমরা রাকসু তহবিলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে পারবো। কিন্তু রাকসুর বর্তমান সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ আমাদের সেই তথ্য দিতে পারেন নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৬ বছর রাকসু অকার্যকর থাকলেও নিয়মিতভাবে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে রাকসুর সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ ইচ্ছেমতো রাকসু তহবিলের অর্থ অনিয়মিতভাবে বিভিন্ন খাতে ব্যয় করেছেন। গতকালের অধিবেশনে এই অর্থ কে কোথায় কীভাবে ব্যয় করেছেন এবং কীভাবে ফেরত আনা যায় এ সম্পর্কিত একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এই কমিটি ১৫ তারিখের মধ্যে তাদের কাজ সম্পন্ন করবেন।’
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ হচ্ছে রাকসুর তহবিলকে ব্যবহার উপযোগী করা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, আইইআর বিভাগের শিক্ষার্থী জারাফার জন্য ফান্ড রেইজিং রাকসুর পক্ষ থেকে, মেডিকেলের রোড ম্যাপ, সমাজ স্বীকৃত পোশাক নিয়ে কটূক্তিকারীদের শাস্তির আওতায় আনা, প্রত্যেকটি হলে পানির ফিল্টার মেশিন স্থাপন, প্রত্যেকটি একাডেমিক বিল্ডিংয়ে স্যানিটাইজেশন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, ছাত্রী হলের সামনে ফার্মেসি, সুপারশপ, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করন, মহিলা জিমনেসিয়াম চালুকরণ, হল এরিযা একাডেমী ভবন, স্যুভেনির শপে উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, আন্ত: হল বিতর্ক আয়োজন এবং ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি।



