উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ১৫০ কেজি সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ
কিশোরগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
ছবি : উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ১৫০ কেজি সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ
সরকার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে প্রদানের বই বিক্রি করা হয়েছে ভাঙ্গারি দোকানে। তাও আবার দুয়েক কেজি না, ১৫০ কেজিরও বেশি! মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন বই কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে। সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পুরাতন বই ভাংরির দোকানে বিক্রি করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
‘বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি করা একটি গুরুতর অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবহেলা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থিত পূর্ব গ্ৰাম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে কয়েক বছরের
পুরাতন বই রাখা ছিলো। গত ১৬ অক্টোবর হুট করেই ভাংরির দোকানদার সালমান বই কিনে নিয়ে আসেন। তখন উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন। তারপর থেকেই সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই কিভাবে বই বিক্রি হলো বিষয়টা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি করা একটি গুরুতর অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবহেলা। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ভাংরির দোকানদার সালমান এর কাছে কত কেজি বই কিনেছেন জানতে চাইলে সঠিকভাবে বলতে চাননি। মনে নাই বলে এড়িয়ে যান তিনি।
গাড়ি চালক সজিব মিয়া জানান, আমি এইসব কিছু জানি না, সালমান ভাই বই মাপামাপি করে দিছেন, আমি শুধু বেন গাড়ি দিয়ে এনে খাদ্য গুদামের ঘাটে নিয়ে আসি। তারপর নৌকা দিয়ে কোথায় নিয়ে গেছে জানি না। ছোট ছোট ১০-১২ বস্তা বই নিয়ে আসছি।
অফিস সহায়ক মোঃ রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, নতুন বই আসবে এইজন্য পুরাতন ১৫০ কেজি বই স্যার বলেছেন বিক্রি করতে। বই বিক্রির করার সময় আমি একবার গিয়েছিলাম দেখতে।
সদ্য বিদায়ী ইটনা উপজেলার শিক্ষা অফিসার জামাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, যেখানে বই ছিলো ঐ রুমে কয়েকবছরের অনেক পুরাতন বই ছিল। আমি আসার সময় সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে আসছি। আনুমানিক প্রায় ৯০০-১০০০ হাজার কেজির উপরে হবে বই ছিল। অথচ বর্তমানে ঐ কক্ষে ২০০-৩০০ কেজি বই পড়ে আছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইটনা উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, পুরাতন নষ্ট বই ফেলে দেওয়ার উপযুক্ত তাই অল্প কিছু বই ভাংরির দোকানে বিক্রি করা হয়েছে। কোনো অনুমতি বা সরকারি নির্দেশনা ছিলো কিনা এই প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মজিব আলমের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ ধরনের অভিযোগ খুবই গুরুতর। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।



