বিরল রোগ সিফাতের মাথা জুড়ে বেঁধেছে বাসা
রাজু মোস্তাফিজ,কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:২২ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
আর দশটি শিশুর মত খাচ্ছে-দাচ্ছে, খেলছে এবং ছুটোছুটি করছে ১৫ মাস বয়সি শিশু সন্তান সিফাত। জন্মের পর তার মাথার পিছনে ছোট্ট একটি কালো দাগ সবার নজরে আসে।
চিকিৎসকদের কাছে গেলে তারা অভয় দিয়ে বলেছিলেন বয়স বাড়ার সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে! কিন্তু ঠিক তো হয়নি, উল্টো বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার মাথার পিছনের বিরল ধরণের রোগটি ক্রমান্বয়ে বিস্তার লাভ করছে। আতংকে রয়েছে পরিবারটি।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের চিকিৎসকগণ দ্রত ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও দরিদ্র পরিবারটি চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করতে পারছে না। মানুষের সাহায্যের আশায় প্রহর গুনছে। ধীরে ধীরে রোগটি আরও ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। হঠাৎ যে কেউ দেখলে এখন চমকে উঠবেন। সন্তানের সুচিকিৎসায় সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন পরিবারটি।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর দক্ষিণ চর ভূরুঙ্গামারী গ্রামের আশরাফুল ও শরিফা দম্পত্তির প্রথম সন্তান সিফাত। আশরাফুল মাছ কেনাবেছা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সামান্য আয়ে চলে তাদের সংসার। সন্তানের এমন বিরল রোগে পরিবারের সকলে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। সিফাতকে প্রথমে ভূরুঙ্গামারী ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তারা রোগের নাম বলতে পারেননি, শিশুটিকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক জানান এটি একটি বিরল চর্মরোগ। যাকে ‘কিউটিস ভার্টিসিয়া জাইরাটা (সিভিজি)’ নামে অভিহিত করা হয়।
সার্জারীর মাধ্যমে এটি অপসারণ করা সম্ভব। তবে এটি দ্রুত বিস্তার লাভ করায় বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে। কালক্ষেপণ না করে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করতে না পেরে হতাশ! ভীষণ দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন।
সিফাতের মা শরীফা খাতুন জানান, এটা জন্মগত অবস্থায় ছিল। ভীষণ চুলকায়। চুলকালে রক্ত বের হয়। এজন্য ছেলে কান্নাকাটি করে। আগে ছোট ছিল এখন মাথা বাড়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টাকা সংগ্রহ করতে পারছি না। ফলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না।
সিফাতের পিতা আশরাফুল আলম জানান, আামার ছেলেকে দু’মাস হলো রংপুরে দেখাইছি। বর্তমানে অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। আমি যে টাকা ইনকাম করি সেই টাকা দিয়ে ছেলের চিকিৎসা হবে না। এজন্য চিকিৎসা করাতে পারছি না। সন্তানকে নিয়ে খুব বিপদে আছি।
সিফাতের দাদা হামিদুল ইসলাম জানান, আমরা প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে সিফাতকে দেখাই। তারা রোগের নাম বলতে পারেনি। তাদের পরামর্শে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তারও রোগের নাম না বলে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছেন। অর্থ সংগ্রহ করতে না পারায় নাতিকে ঢাকায় নিতে পারছি না।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মো. সায়েম জানান, এটি একটি বিরল ধরণের একটি স্কিন ডিজিজ। এটি দ্রত বিস্তার লাভ করে। শিশুটিকে জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউট অথবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য করা সম্ভব হতে পারে। সিফাতের সাথে যোগাযোগ নাম্বার: ০১৭৭৬৮৮৪৬৫১ (দাদা হামিদুল ইসলাম)।



