ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
হাতিয়ায় খাদ্য সহায়তা না পেয়ে বঞ্চিত অর্ধেকের বেশি জেলে পরিবার
হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২০ পিএম
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের মাছ শিকার নিষেধাজ্ঞা চললেও সরকারি খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না অর্ধেকের বেশি জেলে পরিবার। ফলে জীবিকা হারানো হাজারো জেলে পরিবার চরম দুর্ভোগ, হতাশা ও ক্ষোভে দিন কাটাচ্ছেন।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে হাতিয়ার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৯৫ জন, কিন্তু ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সহায়তা পাচ্ছেন মাত্র ১৫ হাজার ৭৩৩ পরিবার। প্রতিটি পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে, ফলে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি জেলে পরিবার সরকারি সহায়তার বাইরে থেকে গেছে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নদীতে নামতে না পারায় তারা একমাত্র আয়ের উৎস হারান। এমন অবস্থায় সরকারি সহায়তা না পাওয়া মানে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকা।
জেলে আমিন রসুল বলেন, ভিজিএফ তালিকায় প্রকৃত জেলেরা বাদ পড়ছেন, অথচ অন্যরা সুবিধাভোগী হচ্ছেন। এতে পরিবার নিয়ে না খেয়ে দিন কাটানোর আশঙ্কায় আছি।
পায়তান ঘাটের জেলে আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, এবার মাছ কম ছিল, ধার করে নদীতে নেমেছি, কিন্তু খরচই ওঠেনি। এখন নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে, সরকারি ভাতাও কবে পাব জানি না। অনেক সময় অভিযান শেষের দিকে চাল আসে, তখন আর কোনো কাজে লাগে না।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছর ইলিশ প্রজনন রক্ষায় সরকার নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ সময় জীবিকা নির্বাহে সহায়তা হিসেবে জেলেদের চাল দেওয়া হয়। এ বছর ৩৯৩ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ এসেছে, যা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে বিতরণ হবে।
তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান বলেন, সরকারি বরাদ্দ সীমিত থাকায় সব নিবন্ধিত জেলেকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নির্ধারিত সংখ্যক জেলেকেই এ বছর সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে জেলেরা দাবি করেছেন, প্রকৃত জেলেদের অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত অতিরিক্ত বরাদ্দ নিশ্চিত না হলে হাতিয়ার শত শত জেলে পরিবার অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হবে।



