উখিয়া-ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে তীব্র গোলাগুলি, বিজিবির সতর্ক অবস্থান
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৩ এএম
কক্সবাজারের উখিয়া ও বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাত থেকে তীব্র গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, রাত ১১টার পর থেকে শুরু হওয়া গুলির শব্দ শুক্রবার ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে শোনা যায়।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল, ধামনখালী, থাইংখালী, বালুখালী এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দারা জানান, রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত গুলির শব্দ ছিল বিশেষভাবে তীব্র। থাইংখালীর স্থানীয় শিক্ষক কমরুদ্দিন মুকুল বলেন, রাতে প্রচুর গুলির শব্দ শুনেছি। ওপারে বড় কোনো সংঘর্ষ চলছে মনে হচ্ছে। এমন শব্দ আগে শুনিনি, সবাই আতঙ্কে আছি।
স্থানীয় সূত্র এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প–সংলগ্ন এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া এলাকায় রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী ও রাখাইনদের নিয়ন্ত্রিত আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়—গুলিতে বাংলাদেশে আশ্রিত এক রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। তবে বিষয়টি কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হয়নি। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, মিয়ানমারে সংঘর্ষে ১২ নম্বর অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিতে এক রোহিঙ্গা আহত—তাহলে আমরা কি নিরাপদ?
তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, সংঘর্ষটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে, সীমান্ত থেকে অনেক দূরে ঘটছে। এপারে গুলি আসার আশঙ্কা নেই।
উখিয়া ব্যাটালিয়ন (৬৪ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থানে থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বালুখালী বিওপির কাছাকাছি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতর থেকে গুলির শব্দ পাওয়া গেছে, আমাদের টহল জোরদার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের ভেতরে কোনো গুলি প্রবেশের তথ্য মেলেনি এবং ঘটনাটি ১২ নম্বর ক্যাম্প থেকে বেশ দূরে ঘটেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি জান্তা সরকারের বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে সীমান্তবর্তী প্রায় ২৭১ কিলোমিটার এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছিল।



