খানসামায় মাচায় তরমুজ চাষে সাফল্য, কৃষকদের মুখে হাসি
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মাচায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সাফল্য পেয়েছেন কৃষকেরা। মাত্র ৭৩ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হওয়ায় তাঁরা ভালোই লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের দাবি, এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হলে স্থানীয় কৃষি অর্থনীতিতে নতুন গতি আসবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চলতি মৌসুমে ৬০ শতক জমিতে মাচায় তরমুজ চাষ করা হয়। কৃষকদের বীজ, সার, জৈব কীটনাশক, ফেরোমন ফাঁদ এবং নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে আরও ১ একর ৪০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেন। সব মিলিয়ে উপজেলায় এবার প্রায় ২ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের আবাদ হয়েছে।
গতকাল সোমবার উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক রবিউল ইসলাম তাঁর মাচা থেকে বিক্রির জন্য তরমুজ তুলছেন। তিনি জানান, ২০ শতক জমিতে মার্সেলো গোল্ড জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। মাচা তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৪–১৫ হাজার টাকা, সঙ্গে সার, কীটনাশক ও শ্রম খরচ যোগে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ হাজার টাকা।
রবিউল বলেন, ৭৫ দিনে প্রথম দফায় ১৫–১৬ মণ তরমুজ বিক্রি করেছি। প্রতি মণ ২ থেকে ২.৫ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়ায় ভালো লাভ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আরও ১০ মণ এবং তৃতীয় দফায় কিছু তরমুজ বিক্রির আশা করছি। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি সম্ভব হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম জানান, আগে তরমুজ বাইরে থেকে আনতে হতো। এখন স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ৫০–৬০ টাকা কেজি দরে কিনে বাজারে ৮০–৯০ টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েই লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে সার, বীজ ও নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মাচা তৈরিই ছিল মূল খরচ। কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, খানসামা এখন কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলায় পরিণত হয়েছে। সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি মাচায় তরমুজ নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন ফসল যুক্ত করে কৃষিকে এগিয়ে নেওয়া হবে।



