চকরিয়ায় ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে দুই যুবককে হত্যা
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পৃথকভাবে ছুরিকাঘাতে এবং পিটিয়ে ২ যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে বদরখালী ইউনিয়নের ফুলতলা খাসপাড়ায় বড় ভাইয়ের ছেলের ছুরিকাঘাতে চাচা সিএনজি চালক হারুনর রশীদ (৪৫) খুন হন।
অপর এক ঘটনায় ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে মহাসড়কের মাতামুহুরি ব্রীজের কাছে গিয়াস উদ্দিন (৪৫) নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
উভয় খুনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার। এর মধ্যে নিহত হারুন ওই এলাকার ছাবের আহমদের ছেলে ও সিএনজি অটোরিকশা চালক ছিলেন।
নিহত গিয়াস উদ্দিন উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের দিঘির পাড় এলাকার গোলাম কাদেরের ছেলে ও ইজিবাইক গ্যারেজ মালিক।
নিহত হারুনের ভাগিনা কাজল বলেন, আমার মামা হারুন পৈত্রিক ভিটি জমিতে নতুন বাড়ি নির্মান করছেন। বাড়ির সীমানা নিয়ে বড় ভাই শেখ আহমদের সাথে বিরোধ রয়েছে। শনিবার সকালে নির্মাণ কাজ করার সময় শেখ আহমদ তাতে বাঁধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে শেখ আহমদের ছেলে মো. খোকা অতর্কিত এসে চাচা হারুনের বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
চকরিয়া থানার এসআই আরাকান লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। তিনি জানান, তার বুকের বামপাশে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, জমির সীমানা বিরোধ নিয়ে এ হতাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো মামলা না হলেও খুনিকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নিহত গিয়াসের স্ত্রী জান্নাতুল নাঈম বলেন, শুক্রবার রাত ২ টার দিকে স্থানীয় মিন্টুসহ মোটরসাইকেল যোগে চিরিঙ্গা যায় গিয়াস উদ্দিন। চিরিঙ্গা থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা প্রতিপক্ষ তৌহিদের নেতৃত্বে ৫ জন কারগাড়ি যোগে মোটর সাইকেলকে ব্যারিকেড দেয়। এসময় কার থেকে তৌহিদসহ ৪-৫ জন নেমে মিন্টুকে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে দুরে দাঁড় করিয়ে রেখে গিয়াস উদ্দিনকে কারগাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
মিন্টুর কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর থানায় অবগত করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ভোরে মহাসড়কের মাতামুহুরি ব্রীজ এলাকা থেকে আমার স্বামীর লাশ উদ্ধার হয়। চকরিয়া থানার এস আই আনোয়ার লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেছেন।
গিয়াস উদ্দিনের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, স্থানীয় দিঘির পাড়ে আমার ছেলের টমটম চার্জিং স্টেশন রয়েছে। চকরিয়া পৌরসভার করাইয়াঘোনা এলাকা থেকে এসে নতুন বাড়ি করা বিভিন্ন অপরাধ ও গরুচোর খ্যাত তৌহিদের নেতৃত্বে এলাকার উঠতি বয়সী ছেলেদের নিয়ে গ্যাংতৈরী করে। গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় টমটম, ব্যাটারীসহ বাড়িঘরে চুরি কাজে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় গত বছর তৌহিদ তার দলবল নিয়ে গিয়াসউদ্দিনের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। এর জের ধরে আমার ছেলে গিয়াসউদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তৌহিদ।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে।সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। গিয়াস উদ্দিনের মাথায় টর্চলাইটের আঘাত করে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাথা থেঁতলানো ছিল। হাতে কামড়ের দাগও রয়েছে।
উভয় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।



