ঝিনাইদহে আমন ধানে পচন রোগে দিশেহারা কৃষক, ফলন নিয়ে শঙ্কা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০৪ পিএম
চলতি রোপা আমন মৌসুমে ঝিনাইদহের সব উপজেলায় ধানের ক্ষেতে ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে পচন রোগের সংক্রমণ। কীটনাশক ও পচনরোধক ওষুধ প্রয়োগ করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না এ রোগ। এতে মাঠের ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ফলে মৌসুমি ফলন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, এখন পর্যন্ত রোগ বা মাজরা পোকার আক্রমণ ব্যাপক আকারে বাড়েনি।
সরেজমিনে সদর, শৈলকূপা, হরিণাকুন্ডু, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানক্ষেতে পচন রোগের সংক্রমণ স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গেছে। কৃষকরা বলছেন, পচনরোধক ওষুধ ও কীটনাশক ব্যবহারের পরও কোনো সুফল পাচ্ছেন না। রাতারাতি ধানের গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
জানা গেছে, জেলার সব ছয় উপজেলায়ই একই অবস্থা। ধান গাছের গোড়ায় পচন দেখা দিচ্ছে, অজানা পোকার আক্রমণে গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৯ মেট্রিক টন।
শৈলকূপার নাকোইল গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এখলাস উদ্দিন বলেন, ধান রোপণের পর থেকেই পচন রোগে অনেক গাছ মারা যাচ্ছে। বারবার কীটনাশক দিচ্ছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। খরচ শুধু বাড়ছে।
কোটচাঁদপুরের শ্রীপুর গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ধানের গোড়ায় পোকা ঢুকে গাছের ডগা ও পাতা কেটে দিচ্ছে। ফলে ধানের গোছা সাদা হয়ে গেছে, গোড়ায় পচন ধরেছে।
সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়ার কৃষক সেলিম উদ্দিন বলেন, ধান আবাদ করে সারা বছরের সংসার চলে। এবার পোকার আক্রমণে ফলন নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, মাঠকর্মীরা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আমনের ফলন নিশ্চিত ও রোগ দমনে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, শিগগিরই সরেজমিনে ধানক্ষেত পরিদর্শন শুরু করব। এখন পর্যন্ত গুরুতর কোনো তথ্য হাতে আসেনি।



