কাপ্তাই বাঁধ বিপদ মুক্ত রাখতে ১৬ জলকপাট ফের খোলা
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় প্রতিদিন ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে হ্রদের পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলগেট ৩ ফুট করে খুলে দেয়া হয়েছে। হ্রদের পানির স্তর সর্বোচ্চতার পৌঁছানো গত সোমবার ৬ ইঞ্চি করে জলকপাট খোলা হয়। পানির প্রবাহ বেশী উর্ধমুখী হওয়ায়।
মঙ্গলবার(৯ সেপ্টেম্বর) থেকে এক ফুট উচ্চতায় খুলে দেওয়া হয়েছে। এতেও পানির প্রবাহ সামাল দিতে না পাড়ায় বাধঁ কর্তৃপক্ষ বুধবার থেকে ফের ৩ ফুট করে বাধেঁর স্পিল ওয়ে খুলে দেয়া হয়েছে বলে জানায়।
বর্তমানে এই উচ্চতায় প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে আরো ৩২ হাজার কিউসেক পানি নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। এনিয়ে প্রতি সেকেণ্ট ৯০ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে।
বিদ্যুত উপাদন হচ্ছে ২২২ মেঘাওয়াট। বৃষ্টিাপাত অব্যাহত থাকায় ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে রাঙ্গামাটি শহর সহ ৮ টি উপজেলার প্রায় নিন্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। যার কারণে জেলায় প্রায় ৪০ হাজার লোক পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে অনেক ফসলের মাঠ। উপজেলা প্রশাসন থেকে পানি বন্ধীর কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে বাধেঁর পানি ছেড়ে দেয়ার কারণে রাঙ্গামাটির চন্দ্র ঘোনা ফেরি চলাচল বুধবার থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তার করণে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে সড়ক ও জনপদের রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান।
কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান বলেন, হ্রদের পানি বিপদসীমায় কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় সোমবার বেলা পৌনে তিনটায় বাঁধের ১৬টি গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। এসময় পানির স্তর ছিল ১০৮.৬৫ এমএসএল। জলগেট ৬ ইঞ্চি খোলা রাখার পরও উজান থেকে পানি আসা অব্যাহত থাকায় হ্রদে পানির স্তর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৮.৮৯ এমএসএল। যার ফলে জলগেইট ১ফুট খুলে দেয়। এর পরও পানির দখল সামাল দিতে ফের জলকপাট ৩ ফুট ইচ্চতায় খুলে দেয়া হয়েছে বলে জানায়।
বাঁধের পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। এর একেবারেই কাছাকাছি চলে আসায় ঝুঁকি এড়াতে ১৬ জলগেট প্রয়োজনে আরও খুলে দেওয়া হতে পারে। যে পরিমাণ পানি ছাড়া হচ্ছে তাতে জনসাধারণের আতঙ্ক হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি ৩ ফুট পর্যন্ত গেট খুললে বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে এর বেশি হলে বন্যার আশঙ্কা থাকে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেন তিন ফুটের বেশি যাতে খুলতে না হয়।
এর আগে গতকাল রাত তিনটায় হ্রদের পানি একেবারেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে আসায় এক ফুট থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন ফুট পর্যন্ত সবকটি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সকাল নয়টায় পানি প্রবাহ কিছুটা কমলে গেটের উচ্চতা ছয় ইঞ্চি কমিয়ে তিন ফুট উচ্চতায় খোলা রাখা হয়।
বর্তমানে হ্রদের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে অর্থাৎ পানির লেভেল অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেলে স্পিলওয়ে খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে বলে বাঁধ কতৃপক্ষ জানায়।



