ছবি : সংগৃহীত
মানিকগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে এবং ১৯৯৭ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। বর্তমানে পৌর এলাকায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করলেও যাতায়াত ব্যবস্থা সেই মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ১২২ কিলোমিটার পাকা ও ১৭৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়কের বেশিরভাগই ভাঙাচোরা, খানাখন্দে ভরা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্ষা এলে এসব রাস্তা পানিতে তলিয়ে গিয়ে নাগরিকদের দুর্ভোগ আরও বাড়ে।
পোড়রা, রিজার্ভ ট্যাঙ্ক, সেওতা, বেউথা, দাশড়া, বাসস্ট্যান্ডসহ প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের অভ্যন্তরীণ সড়ক একই দুরবস্থায় পড়েছে। কোথাও সড়কের বিটুমিন উঠে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, কোথাও জমে আছে নোংরা পানি। কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল চললেও যাত্রীদের নামতে হয় বারবার, আর পায়ে হাঁটা মানুষের দুর্ভোগ হয় আরও বেশি।
পোড়রা এলাকার স্কুল শিক্ষিকা আতিয়া সুলতানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। শত শত শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন কাদা-পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে হয়।
কলেজছাত্রী নিশাত জাহান বলেন, বৃষ্টির দিনে কলেজ যাওয়া মানেই যুদ্ধ করা। কাদা লেগে প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।
গৃহিণী সেলিনা বেগমের অভিযোগ, পশ্চিম দাশড়া থেকে বেউথা বোয়ালী পর্যন্ত সড়ক পানিতে তলিয়ে গেলে শিশুদের স্কুলে পাঠানোই কষ্টকর হয়ে পড়ে।
প্রবীণ বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, রাস্তাঘাটের অবস্থা এতটাই খারাপ যে হাঁটাহাঁটির জন্য ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাই।
রিকশাচালক মনির হোসেন বলেন, গর্তে চাকা আটকে পড়ে রিকশা নষ্ট হয়। আয় কমে যাচ্ছে, মেরামতের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির জানায়, কাদা পানিতে বই-খাতা নষ্ট হয়, অনেক সময় পড়ে যাই, ভালো লাগে না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্রেতারা আসতে চায় না, ব্যবসা কমে গেছে।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন জানান, সড়ক সংস্কারের জন্য ৬০টি কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বর্ষার কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আবহাওয়া অনুকূলে এলে সংস্কার কাজ শুরু হবে, আর তখন দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে।



