হস্তান্তরের আগেই আশ্রয়ণের টিন ইট লুট
রাজু মোস্তাফিজ,কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
চোখের সামনেই আশ্রয়ণের ঘরের টিন খুলে নিয়ে যায় ওরা,ভেঙ্গে নেয় দরজা-জানালা,লুটের সময় ওদের চোখে ছিল হুমকি নিরুপায় ছিলাম। এখন পুরো পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই বসবাস করছি। কান্না জনিত কন্ঠে বলছিলেন দিনমজুর ফজল ও তার স্ত্রী।
হস্তান্তরের আগেই উপজেলার অষ্টমীরচরের দীঘলকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনের থাবা সেই সাথে শুরু হয়েছে লুটপাট। গত দুই বছর থেকে নদী ভাঙ্গন থাকলেও অজ্ঞাত কারনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙ্গন রোধে নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। ৪ বছর আগে কাজ শেষ হলেও করা হয়নি হস্তান্তর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা আছে এমন হুমকি দিয়েই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকের মালামাল খুলে নিয়ে যায় মাইদুলের নেতৃত্রে কয়েকজন যুবক জানালেন স্থানীয়রা। ব্যারাকের কোন মালামাল খুলতে অনুমতি দেয়া হয়নি জানান,উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
-68b4263c1e681.jpg)
জানা গেছে, তথ্য মতে ২০২০-২১ অর্থ বছরে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নের ৯নং ওয়াডের খোদ্দবাসপাতার এলাকার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অধিনে প্রায় ৭৪৩ মে.টন গমের বরাদ্দে মাটি ভরাট করা শেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করা হয় দীঘলকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০টি ব্যারাক। ২০টি ব্যারাকে ১ শত পরিবারের জন্য নির্মিত আবাসনের কাজ শেষে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে হস্তান্তর করা হলেও প্রায় ৪ বছরেরও অজ্ঞাত কারনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হস্তান্তর করা হয়নি সুবিধাভুগি বা ইউনিয়ন পরিষদকে।
এদিকে গত বছর আশ্রয়ণটি নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়লেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি সঠিক কোন পদক্ষেপ। ফলে চলে লুটপাটের রাজত্ব। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কয়েক যুবক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা আছে জানিয়ে সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকের ঘরের টিন,দরজা,জানালা,এ্যাঙ্গেলসহ বিভিন্ন মালামাল খুলে সরিয়ে নিচ্ছেন আর বাধা দিলেই প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে দেয়া হচ্ছে হুমকি জানান স্থানীয়রা।
ভাঙ্গনের দোহাই দিয়ে চলছে লুটপাট। গত বছর নদী ভাঙ্গনের সময় কিছু মালামাল লুট হলেও সদ্য নদী ভাঙ্গনের অজুহাতে লুটপাটের রাজত্ব চলছে বলে জানান,আশ্রয়ণের বাসিন্দারা। নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত ফজল জানান, আমি মাছ মেরে সংসার চালাই এই ( দীঘলকান্দি) আশ্রয়ণের ঘরে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছি আর আমি যে ব্যারাকে আছি সেটিও নদী থেকে দুরে। কিন্তু কোন কিছু না বলেই স্থানীয় মাইদুল,শাহিনসহ কয়েকজন ব্যারাকের টিন খুলে নেয়। এসময় আমি খাইতে বসেছিলাম কিন্তু তারা আমাকে খাওয়ারও সময় দেয় নাই। জোর করে ইউএনও স্যারের কথা বলে চালের টিন, দরজা জানালাসহ খুলে নিয়ে যায়। আমি এখন খোলা আকাশের নিচে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে কষ্টে আছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এসএম সেলিম বলেন, মাইদুল, নাজমুল, রাশেদুল, সাবেক মেম্বার মোস্তাফাসহ কয়েকজন এই লুটপাটের সাথে জরিত আর ইউএনও স্যার তাদের কিভাবে ব্যারাকের মালামাল খুলতে অনুমতি দেয় এটি আমার বুজে আসছে না।
লুটের সঙ্গে জড়িতরা ইতিমধ্যে অফিসের খচরের কথা বলে আশ্রিতদের কাছে টাকাও তুলেছে। তিনি আরো জানান,আমার কাছে কিছু উদ্ধারকৃত মালামাল জমা আছে আর লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারের জন্য আমি থানায়ও অভিযোগ করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, আমি ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় কয়েকজনকে কারা বসবাস করছে তাদের লিস্ট করতে বলছি কাউকে আশ্রয়নের ঘর ভাঙ্গতে বলিনি, যদি কেউ করে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।



