খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, পানির নিচে শত একর ফসলি জমি
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৯ এএম
রাজবাড়ী সদর উপজেলার খালিশা-রামকান্তপুরে জলাবদ্ধতার কারণে পচে যাচ্ছে জমির ফসল। ছবি: সংগৃহীত
রাজবাড়ী সদর উপজেলার খালিশা-রামকান্তপুর গ্রামে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় শত একর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে তিন শতাধিক কৃষকের ধান, পাট ও সবজির আবাদ নষ্ট হওয়ার পথে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন, খালের স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষকদের দাবি, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হলে সারা বছরের খাদ্য সংকটে পড়তে হবে শত শত পরিবারকে। তারা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিলেও এখনো কোনো প্রতিকার পাননি।
স্থানীয় কৃষক সোবাহান তালুকদার জানান, এই মাঠের ধান খেয়েই সারা বছর চলে সংসার। এবার টানা বৃষ্টিতে জমির ধান পচে গেছে। ধান না হলে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়বে।
কৃষক আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, প্রায় ৩০০ কৃষকের ফসল পানির নিচে। জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।
আরেক কৃষক ফজর আলী মোল্লা জানান, আধা বিঘা জমিতে লতি কচু লাগিয়েছিলাম। প্রতি সপ্তাহে দুই হাজার টাকা বিক্রি হতো। সব এখন পানির নিচে।
সরেজমিন দেখা যায়, এক কিলোমিটারজুড়ে জমি পানিতে ডুবে আছে। ধানগাছের ওপর পচন ধরেছে। বিলে থাকা দুটি কালভার্ট দিয়েও পানি বের হতে পারছে না। খালের ভাটিতে স্থানীয় লিটন ঠাকুরের পুকুর খনন ও বাঁধ দেওয়ায় পানি আটকে আছে।
পুকুর মালিক লিটন ঠাকুর বলেন, পুকুরটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদার অনেক খরচ করেছে, তাই পার কাটতে চাইছে না। তবে প্রশাসন বা স্থানীয়রা যা সিদ্ধান্ত নেবে আমি তা মানব।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনি খান জানান, খবর পেয়ে লোক পাঠানো হয়েছিল। তবে পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব কৃষি অফিসের নয়, সাধারণত বিএডিসি বা এলজিইডির। জেলার আরও অনেক জায়গায় মানবসৃষ্ট জলাবদ্ধতা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারিয়া হক বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। একটি পুকুরের কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের দাবি, অবিলম্বে খাল সচল করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। নাহলে ফসল নষ্ট হয়ে তিন শতাধিক পরিবার খাদ্য সংকট ও আর্থিক দুরবস্থায় পড়বে।



