কুড়িগ্রামে বৃষ্টি ও বন্যায় পটলচাষীদের মাথায় হাত
রাজু মোস্তাফিজ,কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
কুড়িগ্রামে বৃষ্টির কারণে পটল ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর কৃষক আবার সার, কীটনাশক ও পরিচর্চা করে ক্ষেতে প্রাণ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও হঠাৎ করে এক সপ্তাহ আগে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পটলক্ষেতসহ অন্যান্য শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে যায়।
এতে অন্যান্য ফসলের সাথে পটলের ক্ষেতও বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে ক্ষুদ্র কৃষকরা অর্থ লগ্নি করে দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবাহমান ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে নীচু জমিতে রোপণকৃত আমন ধান, কলা ও সবজি বানের পানিতে ডুবে যায়। বিশেষ করে যারা পটলচাষ করেছেন তারা এবার অধিক লোকসানে পরেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে চলতি বছর জেলায় ২ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে সবজিচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যা এখন পর্যন্ত অর্জন করা হয়েছে ৮৭০ হেক্টর জমিতে। এই ৮৭০ হেক্টর জমির মধ্যে রোপনকৃত সবজিসহ পটলের ক্ষতি হয়েছে ৮৩ হেক্টর। এছাড়াও ৬২১ হেক্টর আমন ধান ও ১০ হেক্টর কলা আক্রান্ত হয়েছে।
-68b03592442ad.jpg)
এদিকে লাভের আশায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে ধরলা নদীর চরাঞ্চলে কৃষকরা প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে পটল চাষ করেছেন। যারা আগাম চাষ করেছেন তারা কিছুটা লাভবান হলেও, পরে যারা পটল চাষ করেছেন তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ছড়ারপাড় গ্রামের মমিনুল জানান, ৩৫ হাজার টাকা খরচে দুই বিঘা জমিতে করে পটলচাষ করেছি। কিছুটা পটল তুলতে পেরেছি। পরে বন্যা আসায় সম্পূর্ন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়।
একই গ্রামের জামাল ও নুর ইসলাম জানান, প্রথমে বৃষ্টিতে পটলের ফুলগুলো মারা যায়। পরে সার, কীটনাশক দেয়ার পর আবার ফুল ধরা শুরু করে। শেষে হঠাৎ করে ঢলের পানি এসে পটলক্ষেত তলিয়ে যায়। এতে আমার সমস্ত পটলক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসল টাকা তুলতে পারি নাই।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. মো. মামুনুর রহমান জানান, নদী তীরবর্তী অঞ্চলে যারা পটল চাষ করেছেন, সেগুলো পানিতে ডুবে যায়। ইতিমধ্যে ৮৩ হেক্টর সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয় এরমধ্যে পটলও রয়েছে। পটল একবার পানিতে ডুবে গেলে আর সারভাইব করতে পারে না। এরফলে চাষীদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি পটল ক্ষেত ভেঙ্গে আগাম লাউ, কুমড়া বা বেগুন লাগাতে।



