রাঙ্গামাটিতে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা+
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রাঙ্গামাটিতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যার ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে হ্রদের পানি বিপদ সীমায় পৌঁছার কারণে রাঙ্গামাটিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার ফলে হ্রদের তীরবর্তী এলাকায় নতুন নতুন বাড়িঘর প্লাবিত হচ্ছে। পানির প্রবাহ বাড়ায় কাপ্তাই বাধেঁর ১৬টি জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে ।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রাঙ্গামাটির শহরের আশপাশের এলাকা,বাঘাইছড়ি লংগদু ও জুরাইছড়ি এলাকার নির্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে । বাঘাইছড়ির উপজেলা সূত্রে জানা যায় রাঘাইছড়ি উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় পানি উঠেছে। বৃষ্টি থামার পর পানি নামতে শুরু করেছে। তবে কিছু নিচু এলাকায় এখনো পানি রয়ে গেছে।
এদিকে কাপ্তাই জলবিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান বৃষ্টির কারণে কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১০৮.৩৫ এমএস এল দাড়িঁয়েছে। হ্রদের রুলকার্ভ অনুসারে এই সময়ে পানি থাকার কথা ৯০ এমএসএল । তার চেয়ে ১৮ এমএসএল বেশী পানি রয়েছে। যার ফলে লেকের পানি বৃদ্ধি পাওয়া নদীর তীরবর্তী এলাকায় আমন ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষক আজিজ জানান।
এদিকে আবুল নামে এক ব্যক্তি জানায় গত কয়েক দিন হ্রদের পানি কিছুটা কমলেও বর্তমানে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে । ফলে শহরের ঝুল্লিকা পাহাড় শান্তিনগর ,পুলিশ লাইন ও পৌরকলনীসহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত ৪ আগস্ট সোমবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫ মিনিটে প্রথম জরুরী ভিত্তিতে বাধেঁর ১৬ জলকপাট ছয় ইঞ্চি করে খুলে দিয়ে সেকেন্ডে নয় হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন করা হয়েছিল । এর মধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮.৫৫ এমএসএল অতিক্রম করে চুড়ান্ত বিপদসীমায় পৌছার কারণে আরও ১ফুট পানি স্পিল ওয়ে দিয়ে ছাড়া হয়েছে। এর পরও পানির প্রবাহ রোধ করার জন্য সাড়ে তিন ফুট করে স্পিল ওয়ে খুলে দেয়া হয়েছিল।
৭দিন পর বাধেঁর জলকপাট বন্ধ করার পর ফের বুধবার রাত ৮টা থেকে খুলে দেয়া হয়েছে । যা শুক্রবার ও অব্যাহত রয়েছে। বাঁেধর পানি ধারণ ক্ষমতা রয়েছে মাত্র ১০৯ এমএসএল। এবার ভারী বর্ষণ হওয়ায় হ্রদ তীরের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলেন, হ্রদে পানি বাড়ায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটই বর্তমানে পুরোপুরি সচল রয়েছে।৫ ইউনিটের টারবাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যার মাধ্যমে সেকেন্ডে আরোও ৩২ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই লেক হতে কর্ণফুলি নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। এনিয়ে বর্তমানে সর্বমোট ৪১ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে বলে সূত্রটি জানায়।



