পদ্মায় পানি বাড়ায় ঝুঁকিতে ১৪০০ হেক্টর কলার আবাদ
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীর পানি প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এতে উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী লক্ষ্মীকুন্ডা, পাকশী ও সাঁড়া ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। সবজি, আখ ও কলার জমি ডুবে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। এখানে বিপৎসীমা ১৩.৮০ মিটার হলেও মঙ্গলবার সকালে পানির স্তর ছিল ১২.৫২ মিটার। পানি বৃদ্ধির কারণে দাদাপুর, কামালপুর, চরকুড়ুলিয়া, বিলকেদার, চররূপপুর, সাঁড়া ঘাট ও সাহেবনগর চরের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে চরাঞ্চলের প্রায় ১৪০০ হেক্টর কলার জমি। আগামী পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে পানি না নামলে এসব বাগানের গাছ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।
এ ছাড়া চাল, ভুট্টা, আখ, কুমড়া, ধনিয়া, মুলা, শসা, বেগুন, করলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, গাজরসহ বিভিন্ন সবজির জমিও পানির নিচে চলে গেছে। গত এক সপ্তাহে এসব জমির অধিকাংশ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি সামাল দিতে কৃষকরা অপরিপক্ব ধনিয়া, করলা, মুলা ও কলার ছড়া তুলতে বাধ্য হচ্ছেন। বাজারজাত করার মতো না হলেও কমদামে এসব সবজি বাজারে বিক্রি করছেন তারা।
লক্ষ্মীকুন্ডা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ২০ বিঘা জমিতে ধনিয়া আবাদ করেছিলাম, এর মধ্যে ১৯ বিঘা জমির ধনিয়া পানিতে ডুবে গেছে। ১৫ বিঘা কলার জমিও তলিয়ে গেছে। ধনিয়াতে অন্তত ২০-২৫ লাখ টাকা আর কলাতে আরও ৪-৫ লাখ টাকার ক্ষতি হবে।
একই গ্রামের কৃষক নয়ন আহমেদ জানান, পদ্মার চরে হাজার হাজার কৃষক সফলের আবাদ করেন। এ বছর অতিবৃষ্টিতে সব পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষি কর্মকর্তারা যেন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান, এটাই প্রত্যাশা।
দাদাপুর গ্রামের কৃষক মুরাদ আলী বলেন, ৫ বিঘা জমির কলা ও ১ বিঘা জমির কাঁচামরিচ পানিতে তলিয়ে গিয়ে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে দাদাপুর, বিলকেদার ও চরকুড়লিয়ার কলা, ধনিয়া ও মূলাসহ নানা ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষতি কম হবে। যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রণোদনা দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।



