কুমিল্লা-২ সংসদীয় আসন সীমানা পুনর্বহালের দাবি বিএনপির
হোমনা-মেঘনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম
সারাদেশের ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুণ: নির্ধারিত চুড়ান্ত খসড়া তালিকায় কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) সংসদীয় আসন পরিবর্তিত হয়ে হোমনা সাথে তিতাস উপজেলাকে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২ আগস্ট) সকাল ১১ টায় সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি হোমনা উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে কুমিল্লা -২ আসনে হোমনা থেকে মেঘনা কে বাদ দিয়ে (হোমনা-তিতাস) সংযুক্ত করে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তালিকার প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা বিএনপির সহযোগী অঙ্গসংগঠন।
হোমনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গত ৩০ জুলাই জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানার একটি তালিকা প্রকাশ করে। কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) আসনের সীমানা পরিবর্তন করে কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস)। কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) দুটি নতুন সমন্বয়ে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়। এই খসড়া তালিকার বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন নির্বাচন কমিশনের কাছে আমরা ন্যায্য অধিকার পাইনি।’
মহিউদ্দিন আরও বলেন, ‘মেঘনা উপজেলা ১৯৫৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত হোমনার অংশ ছিল। ১৯৯৮ সালে হোমনার ৪টি ও দাউদকান্দির ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে মেঘনা উপজেলা গঠিত হলেও প্রশাসনিক যোগাযোগসহ সব "সুযোগ-সুবিধা" এখনও হোমনা কেন্দ্রিক। এ ছাড়াও ভৌগোলিক বাস্তবতায় হোমনা-মেঘনা নদী, সড়ক ও সামাজিকভাবে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত; সেখানে দাউদকান্দির সঙ্গে মেঘনার কোনো সরাসরি যোগাযোগ নেই। মেঘনাকে দাউদকান্দি যেতে হলে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলা হয়ে যেতে হয়, ফলে দাউদকান্দির সাথে মেঘনাকে সংযুক্তি অযৌক্তিক ও প্রশাসনিকভাবে অকার্যকর। ২০০৮ সালে তৎকালীন কমিশন প্রভাবশালী কিছু মহলের সুবিধার্থে তিতাস উপজেলা কে হোমনার সাথে এবং মেঘনাকে দাউদকান্দির সাথে যুক্ত করে কৃত্রিম ও অপ্রাকৃতিকভাবে আসন বিভাজন করেছিল। কিন্তু সেটি কার্যকর হয়নি এবং জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে। মেঘনা উপজেলার অতীত ইতিহাস,ভৌগোলিক অখণ্ডতা, প্রশাসনিক সুবিধা ও সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় ২০২৩ সালের ১ জুন নির্বাচন কমিশন পুনরায় হোমনা-মেঘনা সমন্বয়ে কুমিল্লা-২ আসন নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে, ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনও সেই সীমানায় অনুষ্ঠিত হয়।’
উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, মেঘনা ও দাউদকান্দির মাঝে কোনো সেতুবন্ধন নেই; রয়েছে বিশাল নদী বিভাজন এবং মেঘনা উপজেলা থেকে দাউদকান্দি যেতে হলে অন্য জেলার উপর দিয়ে যেতে হয়। প্রশাসনিক সেবা, যাতায়াত ও সামাজিক বন্ধনে হোমনা-মেঘনা ঘনিষ্ঠ।
দাউদকান্দির তুলনায় মেঘনা ছোট হওয়ায় নেতৃত্ব বঞ্চনার আশঙ্কাও রয়েছে। মেঘনার স্থানীয় সমস্যা (নদীভাঙন, অবকাঠামো) দ্বিতীয় সারিতে পড়ে যাবে। আসন পুনর্বিন্যাস একটি জনপদের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে জড়িত বিষয়। তাই ভৌগোলিক, প্রশাসনিক, সামাজিক ও ঐতিহাসিক বাস্তবতা বিবেচনায় হোমনা-মেঘনা সমন্বয়ে গঠিত কুমিল্লা-২ আসনই সময়োপযোগী ও কার্যকর। খসড়া তালিকা অনুযায়ী (হোমনা-তিতাস) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১ এর ধারা ৬ উপধারা (২) লঙ্ঘিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষ ০১/০৬/২০২৩ তারিখের গেজেটে কুমিল্লা-২ হোমনা -মেঘনা উপজেলার সমন্বয়ে ২০২৪ সনের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনও হয়েছে। আশা করছি নির্বাচন কমিশন সকল বিষয় বিবেচনা করে (হোমনা -মেঘনা) মিলেই কুমিল্লা-২ আসন করে গেজেট প্রকাশ করবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ‘পৌর বিএনপি সভাপতি সানাউল্লাহ সরকার, পৌর বিএনপি সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল লতিফ, এছাড়াও উপজেলা ও পৌর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের নিকট দাবি জানান, ‘মেঘনার গণবিচ্ছিন্ন কাঠামোর প্রমাণে ব্যর্থ, দুই উপজেলার স্থানীয় জনমতের দাবি, সামজিক ও সাংস্কৃতিক সাযুজ্য, রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও নেতৃত্বের বিকাশে সহায়ক অনুঘটক, জাতীয় রাজনীতির প্রতি আস্থা, চলমান উন্নয়ন প্রকল্প ও প্রশাসনিক পরিকল্পনা ধারাবাহিকতা ইত্যাদি বিষয় সমূহে সু-বিবেচনা করে ১৯৫৪–২০০১ সালের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে হোমনা-মেঘনা সমন্বয়ে কুমিল্লা-২ আসন বহাল রাখা হয়।,’



