Logo
Logo
×

সারাদেশ

ছেলে হারানো শোক এখনো ভুলতে পারেননি বাবা তোফাজ্জল

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:১৭ পিএম

ছেলে হারানো শোক এখনো ভুলতে পারেননি বাবা তোফাজ্জল

কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিল টাকাপোড়া গ্রামের শহিদ সাগর আহমেদের (২১) মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হলেও এখনো ছেলে হারানোর শোক ভুলতে পারেননি বাবা তোফাজ্জল ও মা গোলাপি বেগম।

শহীদ সাগর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের রাষ্ট বিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছরের এই দিনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে মিরপুর গোলচত্বরে পুলিশের গুলিতে মারা যান তিনি।

শহীদ সাগরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, এক বছর পার হলেও বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন বাবা তোফাজ্জেল হোসেন ও মা গোলাপি বেগম। এখনও স্বজনের কাছে ছেলেকে নিয়ে নিজের ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন হাতড়ে কাঁদছেন তারা। মা গোলাপী বেগম এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি। সব সময় ছেলের জন্য আনমনা থাকেন। সাগরের ছোট বোন নুশমী এবারের চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। তিনিও ভাইয়ের জন্য কান্নাকাটি করেন।

ছেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাবা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্তরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আমার ছেলে সাগর। উচ্চ শিক্ষার জন্য তাকে কষ্ট করে ঢাকা পাঠিয়েছিলাম। ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু একটি গুলি আমার স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন করে দিয়েছে। আমার সাগরের কি দোষ ছিলো যে অল্প বয়সে তাকে জীবন দিতে হলো। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকেই জীবন দিতে হলো তাকে।

তিনি আরও বলেন, আমি কৃষক। আমার মাঠে কাজ করা দেখে সাগর প্রায়ই বলত বাবা, আর কয়টা দিন অপেক্ষা করো তোমাকে আমি আর রোদে পুড়তে দেব নাআমার সব শেষ হয়ে গেছেআমার ছেলে তো কোনো অপরাধ করেনি। আমার বুকের মানিক যেন পরপারে ভালো থাকে সেই দোয়া আপনারা করবেন। সাগরের জন্য আমাদের সব কিছু থমকে গিয়েছে।

কাঁদতে কাঁদতে সাগরের মা গোলাপী বেগম বলেন, সাগর শুধু আমাদের ছেলে ছিল না, সে ছিল আমাদের ভরসা-ভবিষ্যৎ। গত একটা বছর সাগরকে ছাড়া আমাদের কীভাবে দিন কেটেছে তা একমাত্র আল্লাহ জানেনএই একটা বছর আমরা প্রতিদিন একটু একটু করে মরছিওর হাসি ওর কথাগুলো এখন স্মৃতিচারিদিক শুধু শূন্যতা

এদিকে গত শুক্রবার (১৮ জুলাই) সাগরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাদ জুম্মা নিজ বাড়িতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন তার পরিবার। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার সাগরের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মার খোঁজ-খবর নেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শহীদ সাগরের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও জিয়ারত করা হয়।

এ সময় জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সাগরের পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও শনিবার বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজবাড়ী জেলা শাখার নেতারা শহীদ সাগরের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর যিয়ারত করেন। পরে তারা সাগরের পরিবারের খোঁজখবর নেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর গোলচত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময়গুলোতে নিহত হন মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাগর আহমেদপরদিন ২০ জুলাই তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের টাকাপোড়া গ্রামে এনে দাফন করা হয়

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন