ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর
তিতাসের ভাঙনে দিশেহারা নদী পাড়ের মানুষ
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে তিতাস নদীর ভাঙনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ী, আবাদি জমি ও স্থাপনা। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, আবাদি জমিও অন্যান্য স্থাপনা। সম্প্রতি উজানচর, কৃষ্ণনগর, বুধাইরকান্দি, রাধানগরসহ কয়েকটি গ্রামে নদীভাঙনের মাত্রা আরও বেড়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কৃষ্ণনগর ও আশপাশের গ্রামগুলোর পরিবার ভিটেমাটি ও বসতবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কৃষ্ণনগর এলাকা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শতাধিক পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হচ্ছে। ভাঙনের মাত্রা এতটাই তীব্র যে, আগাম সতর্কতা হিসেবে অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। ভাঙনের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তারা দ্রুত জিও ব্যাগ ও বালুভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
উজানচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. সুজন অভিযোগ করে বলেন, “স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।”
কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা বাসনা দাস বলেন,“ আমাদের পাঁচ শতক জমির ওপর নির্মিত ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের সামনে কোনো পথ নেই।”
ভুক্তভোগী যুধিষ্ঠির দাস বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, মাছ ধরে খাই। নদী আমাদের ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। যদি সহযোগিতা না পাই, তবে আমাদের পানিতে ভাসতে হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আল আমিন অভিযোগ করে বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে এই ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলেন, “এই এলাকার জন্য ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কৃষ্ণনগরে ভাঙন অব্যাহত থাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর রহমান বলেন, “২০১৮-১৯ সালে নদী খননের ফলে ভাঙন দেখা দেয়। এরই মধ্যে আমরা কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ব্যবহার করেছি। কৃষ্ণনগরের ভাঙন রোধে খুব দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে।”



