Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাবি ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ

Icon

রাবি প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম

রাবি ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ

ছবি - সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কয়েক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে; যাদের মধ্যে দুজন সংগঠন থেকে আগেই অব্যাহতিপ্রাপ্ত ও বহিষ্কৃত। ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)-এর শিক্ষার্থী জসিমউদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

যাদের বিরুদ্ধে তিনি এই অভিযোগ এনেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব, বহিষ্কৃত কর্মী হাসিবুর ইসলাম হাসিব, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী বিশালসহ আরও ১০-১২ নেতাকর্মী।

জসিমউদ্দীনের অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকার জিয়া স্কুল রোডে তাকে মাররধর করে দেড় হাজার টাকা আদায় করেন ছাত্রদলের ওই নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগের একটি কপি পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তদন্তসাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

লিখিত অভিযোগে জসিমউদ্দীন বলেন, মাগরিবের নামাজ শেষে এক বন্ধুর সঙ্গে হাঁটার সময় তিন-চারটি মোটরসাইকেল এসে আমার পথরোধ করে। এরপর আমাকে আলাদা করে নিয়ে গিয়ে চাঁদা দাবি করে এবং একটি ছবি দেখিয়ে আমার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

তারা আমার কাছে দুই হাজার টাকা দাবি করে। আমি তাদের জানাই, হলে থাকার জন্য অতীতে ছাত্রলীগের কয়েকটি প্রোগ্রামে বাধ্য হয়ে অংশ নিয়েছিলাম, তবে কখনো কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াইনি। আমি জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের প্রমাণ হিসেবে আমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট এবং ছবি দেখাই। এ ছাড়া এলাকার সংস্কারমূলক কাজে যুক্ত ছিলাম বলেও তাদের জানাই।

জসিমউদ্দীনের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থান আমলে না নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করেন এবং দেড় হাজার টাকা দিতে বাধ্য করেন। পাশাপাশি তারা ভবিষ্যতে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং সংগঠনের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার শর্ত দেন।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব বলেন, আমি গতকাল একটি প্রোগ্রামে যাওয়ার সময় ওই ছেলের সঙ্গে দেখা হয়। তখন আমার সঙ্গে থাকা এক ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারি, এই ছেলে আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে।

বিষয়টি জানার পর আমি তার সঙ্গে কথা বলি এবং তার ফোন দেখতে চাই। পরে কিছু না পেয়ে তাকে চলে যেতে বলি। কোনো ধরনের টাকা-পয়সার লেনদেন এখানে হয়নি। না হলে সন্ধ্যার ঘটনা সে রাত ২টা ৩০ মিনিটে পোস্ট করত কেন?

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, একই দিন রাতে ক্যাম্পাসের ইবলিশ চত্বরে আরেকটি চাঁদাবাজি চেষ্টার ঘটনা ঘটেছিল। রাতে সেখানে ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী এবং ক্যাম্পাসের বাইরের এক যুবক বসেছিলেন। সেখানে গিয়ে ‘এই চক্রটি’ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে গিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করে দেয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রদলের অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা আহসান হাবীব বলেন, ওটা এক বহিরাগত ছেলে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মেয়ের বিষয় ছিল। প্রক্টোরিয়াল টিম এসে ঘটনাটি সমাধান করে দেয়। এখানে চাঁদাবাজির কোনো প্রশ্নই আসে না।

ইবলিশ চত্বরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান বলেন, একই দিনে রাতে এই চক্রের বিরুদ্ধে আরো একটি চাঁদাবাজি চেষ্টার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয় এবং ঘটনার মীমাংসা করে। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, যেহেতু তারা দুইজন (আহসান হাবীব ও হাসিবুর ইসলাম হাসিব) বহিষ্কৃত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের কোনো অপরাধের দায় শাখা ছাত্রদল নেবে না।

একটা চক্র সবসময়ই মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাদের উপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা চালায়। আমি জানি না এ ঘটনা সত্য কি-না। তবে যদি সত্য প্রমাণিত হয় তা হলে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান করব তারা যেন এ বিষয়ে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আর এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সর্বাত্মক সহায়তা করবে।

উল্লেখ্য, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের এক সদস্যের সঙ্গে চাঁদাবাজির ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় আহসান হাবীব ও হাসিবুর ইসলাম হাসিবকে ছাত্রদল অব্যাহতি দেয়। 

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন