নারী প্রতিনিধিত্ব ছাড়া ঐকমত্য কমিশন অবমাননাকর -রাশেদা কে চৌধুরী
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে বিজয়ী দলের বিতার্কিকদের ট্রফি হাতে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ
ভোট মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার, আর নারীর অধিকার রক্ষায় ভোট বর্জন কোনো সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী। তিনি বলেন, নারী প্রতিনিধিত্ব ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন নারীর জন্য অবমাননাকর। কমিশন ক্ষমতার বিলি-বণ্টন ও রাজনৈতিক ইস্যুতেই ব্যস্ত, সেখানে নারীর প্রশ্ন অবহেলিত।

শনিবার (২৩ আগস্ট) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন ও নারীর ক্ষমতায়ন শীর্ষক ছায়া সংসদে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদা কে. চৌধুরীর বক্তব্য-“নারীকে বাদ দিয়ে নারীর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নয়”—এই আন্তর্জাতিক নীতি উপেক্ষিত হয়েছে ঐকমত্য কমিশনে। গত ৩ আগস্ট ৬৭টি নারী সংগঠন কমিশনে ক্ষমতায়ন ইস্যুতে প্রস্তাব দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি।রাজনৈতিক দলগুলোও নারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেনি। তিনি মনে করেন, কমিশন ঘেরাও ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।
নির্বাচনে নারীর মনোনয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো ৩৩–৫০ শতাংশের প্রস্তাব উপেক্ষা করছে, বরং ৫–৭ শতাংশ মনোনয়ন দিচ্ছে, যা দয়া বা দাক্ষিণ্যের মতো।
পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র—সর্বত্রই নারীর ক্ষমতায়নের দাবি তুলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সংরক্ষিত নারী আসনে বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থা আসলে “দলীয় মনোনয়ন বা সিলেকশন”, জনগণের ভোট নয়।
এর ফলে নারীর জনপ্রিয়তা, দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই হয় না। সংসদে অনেক নারী এমপি প্রকৃত অর্থে কাজ করেননি; কেবল হাততালি বা হ্যাঁ–না ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছেন। এভাবে নারী এমপিদের সংসদে কেবল অলংকারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে, যা নারীর জন্য সম্মানজনক নয়।
সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নারীরা নির্বাচিত হলে সংসদ ও গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে।
নারী আসন ও ঐকমত্য কমিশন নিয়ে বিতর্ক
কমিশন দাবি করছে তারা সংসদে নারীর আসন বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের চেষ্টা করেছে, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়নি।
দুঃখজনক হলেও সত্য, ঐকমত্য কমিশনে কোনো নারী সদস্য নেই।
সংলাপে ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও প্রধান দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো নারী প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
বিশ্লেষকদের মতে, নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে নারী সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
ছায়া সংসদ প্রতিযোগিতা
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে অনুষ্ঠিত “সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন হলেই নারীর ক্ষমতায়ন সুরক্ষিত হবে” শীর্ষক ছায়া সংসদে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়। তারা পরাজিত করে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, মাইদুর রহমান রুবেল, নিশাত সুলতানা ও জান্নাতুল বাকেয়া কেকা। শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।



