
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩০ এএম
মিয়ানমারে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি জান্তা প্রধানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৩২ পিএম

মিয়ানমারের সামরিক সরকার প্রধান মিন অং হ্লেইং
মিয়ানমারের সামরিক সরকার প্রধান মিন অং হ্লেইং ঘোষণা দিয়েছেন যে, চলতি বছরের ডিসেম্বরেই দেশটিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন। একই সঙ্গে তিনি চলমান গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটাতে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সহিংসতা পরিহার করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
রাজধানী নেইপিদোর বিশাল সামরিক প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে মিন অং হ্লেইং বলেন, সেনাবাহিনী একটি “গৌরবময়” নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কাজ করছে এবং বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে এবং এটি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বহু-দলীয় ও অবাধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে।
তবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ও সমালোচকরা জান্তা সরকারের এই নির্বাচনী পরিকল্পনাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। তাদের মতে, সামরিক বাহিনী তাদের পছন্দের রাজনৈতিক দলগুলোর মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার পথ তৈরি করতে নির্বাচনের আয়োজন করছে। ইতোমধ্যে বিরোধী বহু রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ বা নির্বাচন থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে সেনা-সমর্থিত দলগুলোর জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় জান্তা সরকার। এরপর থেকেই দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী আন্দোলন, সশস্ত্র প্রতিরোধ ও গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। সামরিক বাহিনী ক্রমাগত বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতি চরম সংকটে পড়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বেলারুশ সফরে গিয়ে মিন অং হ্লেইং প্রথমবারের মতো নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করেন। সে সময় তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে।
অন্যদিকে, সামরিক সরকারের সাম্প্রতিক আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরাসরি জরিপ চালানো সম্ভব হয়েছে। নেইপিদোর একটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, জান্তা সরকার ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রায় ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
সামরিক শাসনামলে বিরোধী দলগুলোকে দমন করে বেশ কয়েকটি দলকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র সেনা-সমর্থিত ও পরীক্ষিত রাজনৈতিক দলগুলোকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা সমালোচকদের মতে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে। তবে জান্তা সরকার দাবি করেছে, ইতোমধ্যে ৫৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছে।
সূত্র: রয়টার্স